ডা: তাহের

চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে জামায়াত কাজ করছে

`বাংলাদেশের আপামর মানুষকে মুক্ত আকাশ উপহার দিতে চাই। যেখানে আমাদের কথা বলা যাবে, নিঃশ্বাস ফেলা যাবে, অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, নিরাপত্তা থাকবে।'

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) সংবাদদাতা

Location :

Cumilla
ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের
ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের |ইন্টারনেট

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের বলেছেন, ‘বাংলাদেশে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য হাজার হাজার মানুষের রক্ত দেয়ার পরও আজ আবার আকাশে কালো মেঘের ছায়া দেখা যাচ্ছে। আবারো ষড়যন্ত্র দেখা যাচ্ছে। আবার ঘষেটি বেগমদের উত্থান দেখা যাচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশ যদি না থাকে, চৌদ্দগ্রামও থাকবে না, কুমিল্লা থাকবে না। যেটা থাকবে বিশ্বাসঘাতকতার ফসল সিকিম ভারতের অঙ্গরাজ্যের মতো।’

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশও ভারতের সিকিম, ভুটানোর মতো রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা কি ভিন্ন দেশের ক্রীড়ানক সিকিম হয়ে যাবো? না, তার বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশের আপামর মানুষকে মুক্ত আকাশ উপহার দিতে চাই। যেখানে আমাদের কথা বলা যাবে, নিঃশ্বাস ফেলা যাবে, অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, নিরাপত্তা থাকবে। আমার সন্তান ভার্সিটিতে যাবে, আবার নিরাপদে ফিরে আসবে।’

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের নোয়াবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জামায়াতের ধর্মপুর নাজিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের নির্বাচনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা: তাহের আরো বলেন, একটি চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়ার কাজ করছি। সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি তৈরির কাজ করছি। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ করছি। কিন্তু একটি দল দুইদিন আগেও একটি বাস কাউন্টারে হামলা করেছে। টাকা লুটে নিয়েছে। সমস্ত বাস স্ট্যান্ড দখল হয়ে আছে। আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুছকে বলেছি, অতীতে একটি দল সারা বাংলাদেশে সব কিছু দখল করে নিয়েছিল। তারা বিতাড়িত ও দেশান্তরিত। কিন্তু কোন বাসস্ট্যান্ড তো মুক্ত হয় নাই। আবদুর রহিমের জায়গায় আবদুস সালাম এসেছে। কিন্তু মানুষের কোন কল্যাণ হয় নাই। আমরা এই চাঁদাবাজ ও দখলবাজ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করবো, ইনশাআল্লাহ।

জুলাই সনদ তৈরি হয়েছে কিন্তু এটাকে আইনী ভিত্তি দেয়ার জন্য বাধা তৈরি হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে, তার মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। এটা ৩১টি দলের মধ্যে ২৫ দলের দাবি। জুলাই সনদের তিনটি অংশ; ঐক্যমত পোষণ করা, আইনি ভিত্তি দেওয়া ও বাস্তবায়ন করে এর ভিত্তিতে নির্বাচন করা। এখন পর্যন্ত ঐক্যমত হয়েছে। আইনি ভিত্তি হলে হৃদয়ে ধারণ হবে। আর এর ভিত্তিতে নির্বাচন হলে সেটা হবে বাস্তবায়ন। আমরা এক হয়েছি, কিন্তু এর ভিত্তিতে কাজ করবো না, এটাতো জাতির সাথে একটা ধোঁকাবাজি।

একটি দল কেন এটা মানে না? তারা মনে করছে, তারা আবার ক্ষমতায় আসলে পূর্বের সেই সমস্ত অন্ধকার গলি খোলা রাখতে পারবে। সেখানে আমরা স্ট্রং। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে লক্ষ্যে আমরা লড়াই করছি, লড়াই আরো জোরদার হবে, ইনশাআল্লাহ। যারা সংস্কার চাচ্ছেন না, যারা পিআর সিস্টেম চাচ্ছেন না। তারা মূলত বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থের পরিবর্তন হোক, উন্নতির দিকে যাক, সংস্কার হোক, সেটাই চাচ্ছেন না। বাংলাদেশ যদি আবার সন্ত্রাস থাকে, চাঁদাবাজি থাকে, চুরি-ডাকাতি থাকে, ঘুষ থাকে-আমরা এ বাংলাদেশ চাই না। আমরা বিলিয়ন-মিলিয়ন ডলার পাচার ও অনিয়মের বাংলাদেশ হতে দিব না, ইনশাআল্লাহ।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমির অ্যাডভোকেট মু. শাহজাহান, উপজেলার আমির মাহফুজুর রহমান, সাবেক আমির ভিপি সাহাব উদ্দিন। কালিকাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাজী রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য আমির জামায়াতের উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবদুর রহিম, কালিকাপুর ইউনিয়ন আমির আবুল হাশেম, সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান, মমিনুল ইসলাম মজুমদার, মোস্তফা নুরুজ্জামান খোকন, কালিকাপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম মজুমদার, চিওড়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিল্লাল হোসাইন, ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম খোকন, ডা: আবদুল হালিম, মাস্টার বশির উদ্দিন, ধর্মপুর নাজিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশীদ, ব্যবসায়ী শাকিল চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন চিওড়া আজগড়িয়া মাদরাসার প্রফেসর সোলাইমান চৌধুরী।

সাবেক ছাত্রনেতা মু. ফরিদুজ্জামান পরিচালনায় অন্য মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান ভুঁইয়া, জামায়াতের পৌরসভা আমির মাওলানা ইব্রাহিম, উপজেলা সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, কর্মপরিষদ সদস্য জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।