ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মো: ইউসুফ আলী (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) সকাল ৯টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার বিপরীতে ময়মনসিংহ-ভৈরব রেলপথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত বৃদ্ধের বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত খোরশেদ আলীর ছেলে। নিহত ইউসুফ আলীর ১ ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি রেলস্টেশন অফিসার মো: মিজানুর রহমান বলেন, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী নাসিরাবাদ ট্রেনটি সকাল ৯টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ অতিক্রম করে। ঘটনাটি তখনই হয়তো ঘটেছে। সকালে এই দুর্ঘটনাটি ঘটলেও খোঁজ মেলে সোমবার দুপুর ২টার দিকে।
এদিন দুপুরে রেলপথ ধরে যাওয়ার পথে রেললাইনের পাশে লাশটি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, আমি রেললাইন দিয়ে বাজারে যাওয়ার পথে লাশটি দেখতে পাই। তখন আশেপাশের লোকদের ডাক দিই। তারা এসে পুলিশকে খবর দেয়।
স্থানীয়দের সংবাদ পেয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনার খবর কিশোরগঞ্জ জিআরপি থানা-পুলিশকে অবগত করে।
ইউসুফ আলীর ছেলে রিকশাচালক ইজাজুল হক বলেন, ‘সকালে খাওয়া-দাওয়া করে আব্বা বাড়ি থাইক্কা বের অইছিলো কচুর লতি টুক্কানির (কুড়ানোর) লাগি’,- এই বলেই ছেলে ইজাজুলের কান্না।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃদ্ধ ইউসুফ আশেপাশের এলাকার ঝোপঝাড়, রাস্তা-ঘাট ও পতিত জমিতে থাকা কচুর লতি ও বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি কুড়িয়ে আঁটি বেধে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালেও ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার বিপরীতে রেললাইনে কচুর লতি তুলতে যান তিনি। এ সময় অসাবধানতাবশত রেললাইনে লতি তুলার সময় চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় তিনি নিহত হন বলে জানায় স্থানীয়রা। ইউসুফ আলীর নিথর দেহের পাশেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল একমুঠো কচুর লতি।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ওবায়দুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। নিহত ইউসুফ আলী কচুর লতি ও শাক আঁটি বেধে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দুর্ঘটনাটি রেলওয়ে পুলিশের আওতাধীন হাওয়ায় কিশোরগঞ্জ জিআরপি থানা-পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।