মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্র হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন (১৯) হত্যার আট দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দু’যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ সময় পুলিশ সুপারও উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেফতার হওয়া দুই যুবক হলেন হৃদয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু টমটম চালক কাজল মিয়া (২০) এবং বাদাম বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম (২১)।
কিশোরগঞ্জ জেলার কালিয়ারচরের দাড়িয়াকান্দির ফুল মিয়ার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের রাজাপুর এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তারা শ্রীমঙ্গল শহরতলীর শাহিবাগ এলাকার বাসিন্দা। তারা মাদকাসক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, হৃদয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে গামছা দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে হত্যা করে। হৃদয় অনলাইন জুয়া খেলায় আসক্ত ছিল। সে তার বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে জুয়া খেলত। হত্যাকীরারা এতটাই কাছের বন্ধু ছিল, তারা মোবাইল ফোন বিক্রি করে হৃদয়কে টাকা দেয় জুয়া খেলার জন্য। ধাপে ধাপে তারা হৃদয়কে মোট ২২ হাজার টাকা ধার দেয়। সে টাকা আর ফেরত দেয়নি।
এছাড়া কিছুদিন আগে হৃদয় তাদেরকে নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিল চাকরি দিবে বলে। কিন্তু চাকরি না দিয়েই সে শ্রীমঙ্গলে চলে আসে। এসব কারণে হৃদয়ের প্রতি তাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভ থেকেই পরিকল্পিতভাবে হৃদয়কে হত্যা করে।
পুলিশ সুপার বলেন, খুনিরা প্রযুক্তি সম্পর্কে এতোটাই ওয়াকিবাল ছিল যে তারা কোনো ক্লু রেখে যায়নি। এই ঘটনা উদঘাটনে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা রিপোর্টের পাশাপাশি মেনুয়্যাল পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়নের কাকিয়াছড়া চা-বাগান থেকে গাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় হৃদয় মিয়া নামের ওই কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হৃদয়ের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় এলাকায়। তার বাবার নাম লিটন মিয়া ও মায়ের নাম হাসিনা বেগম। তিনি শহরতলীর শাহীবাগ আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবারের সাথে বসবাস করতেন।