বাউফলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হৃদয় হোসেন (১৮) আর নেই। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি মারা যান।
শহীদ হৃদয়ের বাড়ি বাউফল উপজেলার বাউফল ইউনিয়নের পশ্চিম যৌতা অলিপুরা ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে বিজয় মিছিলে মাথায়, বুকে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
হৃদয়ের বাবার নাম আনসার হাওলাদার (৫৮) আর মায়ের নাম মোরশেদা বেগম (৪৫)। পরিবারের চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে হৃদয় হোসেন সবার ছোট ছিলেন। কৃষক পিতার আদরের সন্তান ছিলো হৃদয়।
তার মৃত্যুতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শহীদ হৃদয়ের ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম (২৭) বলেন, ‘আমার শালা খুব সহজ সরল ছিলো। ঢাকায় চাকরি খুঁজতে গিয়েছিলো। হৃদয়ের খুনিদের ফাঁসি চাই। শ্বশুর কৃষিকাজ করে। সরকার যেন তার দিকে খেয়াল করেন।’
সাইফুল আরো বলেন, ‘আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন খুব অভাবী। আমার শ্বশুর স্ট্রোকের রোগী। তাকে কান্না করতে দিচ্ছি না। আমার শালাকে আগামীকাল ৫ এপ্রিল সকালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।’
কান্নাজড়িত কন্ঠে হৃদয়ের বাবা আনসার হাওলাদার বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমি আমার সবচেয়ে ছোট ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই। ফাঁসি চাই। আর কোনো কথা নাই।’
এ বিষয়ে নয়া দিগন্তকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘বাউফলবাসীর গর্ব জুলাইযোদ্ধা হৃদয়কে আল্লাহ যেন শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেন। তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করেন।’
তিনি হোয়াটসঅ্যাপ কলে বলেন, ‘এই মুহুর্তে আমি ওমরা করার উদ্দেশে সৌদি আরবে অবস্থান করায় ফোনে শহীদের পরিবারের সাথে কথা হয়েছে। শুরু থেকেই আমি তার চিকিৎসা ও যাবতীয় বিষয়ে দেখভাল করেছি। হৃদয় ইসলামের জন্য একজন নিবেদিত কর্মী ছিল।’
এ বিষয়ে নয়া দিগন্তকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নী জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে আহত যোদ্ধা হৃদয়ের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। দ্রুত হৃদয় হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একইসাথে হৃদয়ের পরিবারকে অর্থনৈতিক সহায়তারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।’