আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক এবং হোসেনপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মবিন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শহরের বড়বাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি নিজেকে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ঘোষণা দেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কিশোরগঞ্জের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। বাকি রয়েছে দুইটি আসন কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) ও কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী বাজিতপুর)। ওই আসন দুইটির মধ্যে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনটি মিত্র একটি দলের প্রধানের জন্য ছেড়ে দেয়ার গুঞ্জন রয়েছে। তবে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে দলের একাধিক ‘যোগ্য’ প্রার্থী মাঠে থাকায় এ আসনটি নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি বিএনপি।
এর মধ্যেই ওই আসনে (কিশোরগঞ্জ-১) প্রার্থী হয়ে আলোচনা বাড়িয়ে দিয়ে জহিরুল ইসলাম মবিন বলেন, ‘আগামী দিনে নতুন করে দেশ গড়তে হলে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে যোগ্য ও কর্মঠ নেতৃত্বের প্রয়োজন। যারা অন্যায়, অপকর্ম ও চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত তাদেরকে মনোনয়ন দিলে বিজয় আনা যাবে না।’
মতবিনিময় সভায় হোসেনপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এ আসনের বিএনপির আধা ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশী নিজেদের পক্ষে সভা, সমাবেশ ও মিছিল করে প্রচার চালাচ্ছেন। তাদেরকে কেন্দ্রীয় বিএনপি ডেকে নিয়ে কথাও বলেছেন। এ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করায় জহিরুল ইসলাম মবিন নতুন করে এলাকায় তৎপরতা বাড়িয়েছেন।
তিনি ছাড়াও আসনটিতে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত পাঁচজন। তারা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ হিলালী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: মাজহারুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম খান চুন্নু, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ালীউল্লাহ্ রাব্বানী ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল।
দলীয় মনোনয়ন চেয়ে মতবিনিময় সভায় জহিরুল ইসলাম মবিন বলেন, ‘আমি বিগত স্বৈরাচারের আমলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আসন থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। ওই সময় আমার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমার কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি তৃতীয় হয়েছিলেন। আমাকে এই আসনে মনোনয়ন দিলে আমি বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘এই আসনে হোসেনপুর উপজেলা থেকে আমি একমাত্র প্রার্থী। আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলে এলাকাবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হবে। আওয়ামী লীগের আমলে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বল্প সময়ে আমি উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে এলাকায় যে কাজ করেছি, আমার বিশ্বাস বড় পরিসরে সুযোগ পেলে এলাকার জন্য আরো অনেক কিছু করতে পারবো।’
মবিন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর অনেক নতুন নেতার জন্ম হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি বিগত ১৭ বছর আন্দোলনের মাঠে ছিলাম। নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের অত্যাচারের শিকার হয়েছি। জেল-জুলুম খেটেছি। পুলিশের নির্যাতনে আমার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও আমি রাজনীতি ছাড়ি নাই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে আমার জীবন নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। আমাকে মনোনয়ন দিলে এই আসনটি তারেক রহমানকে আমি নিশ্চিত উপহার দিতে পারবো।’
জেলা বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একটি সমৃদ্ধ জনপদ গড়ে তুলতে হলে শুধু বর্তমান নিয়ে না ভেবে ভবিষ্যতের জন্যও পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে।’ মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হলে সেভাবেই তিনি এগিয়ে যেতে চান বলেও তিনি জানান।



