জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতি বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের দাবি। কালো টাকা, সন্ত্রাস, ব্যালট বাক্স ছিনতাই প্রতিরোধ ও সবার ভোটের মূল্যায়নের জন্য পিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই। আপনারা লক্ষ্য করেছেন ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা নিয়মিত জামায়াতের আমিরের সাথে সাক্ষাৎ করছেন। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে আমরা রাজা হবো না, আমরা দেশের নাগরিকদের সেবক হয়ে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ে তুলবো।’
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে বনপাড়া বাইপাস চত্বরে জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেশের মানুষ বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। তারা ফ্যাসিবাদীদের বিচারের কথা বলে ক্ষমতায় বসেছিলেন। কিন্তু তার চারপাশে ফ্যাসিবাদের দোসর ও ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা সরকারকে বিভ্রান্ত করছে এবং একটি দলের পকেটে ঢুকিয়ে দিতে চক্রান্ত করছে। দেশের বেশিরভাগ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।’
বিভিন্ন সংস্থার তথ্যের জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৭২ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়, দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি নির্বাচন চায় কি না তা গণভোট দিয়ে জনগণের রায় নিন।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ দাঁড়িপাল্লায় নীরবে ভোট দিয়ে নীরব বিপ্লব ঘটাবে ইনশাআল্লাহ। বিগত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের নিরঙ্কুশ বিজয় সেটা প্রমাণ করেছে। আগামী সংসদ নির্বাচন হতে হবে পিআর পদ্ধতিতে। আমরা জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি। আমরা ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চাই। তবে তার আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
জামায়াতের এ বলেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে অমুসলিমরা সবচেয়ে বেশি ভালো থাকবে। একজন মুসলিম ধর্মীয় ক্ষেত্রসহ সব জায়গায় যতটুকু অধিকার পাবে, অমুসলিমরাও তাই পাবে। জামায়াত অমুসলিমদের সব ধরনের নিরাপত্তা বিধান করবে। বেকারত্ব দূর করা হবে, আঠারো কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাতকে শক্তিতে রুপান্তর করা হবে। কর্মসংস্থানের জন্য কলকারখানা গড়ে তোলা হবে। মা-বোনদের জন্য আলাদা কর্মসংস্থানের সব ব্যবস্থা রাখা হবে। তাদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।’
উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা আব্দুল হাকিম। উপজেলা সেক্রেটারি আবু বকর সিদ্দিকের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমির ড. মীর নুরুল ইসলাম, নায়েবে আমির অধ্যাপক ইউনুস আলী ও অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসাইন খান, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সাদেকুর রহমান, নাটোর-১ আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ও নাটোর-৩ আসনের এমপি প্রার্থী অধ্যাপক মো: সাইদুর রহমান, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম রাসেল, গুরুদাসপুর উপজেলা আমির মাওলানা আব্দুল আলিম, জেলা শূরা সদস্য আব্দুল খালেক, জেলা মসজিদ মিশন অ্যাকাডেমির সভাপতি মাওলানা আবুল হোসাইন, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা হাসানুল বান্না উজ্জল, জিয়াউর রহমান জুয়েল ও বনপাড়া শহর জামায়াতের আমির মীর মহিউদ্দিন।