ভাবিকে গলা কেটে হত্যার ১০ বছর পর পিটিয়ে মারলেন ভাতিজিকে

মঙ্গলবার দুপুরে নাহিল বাড়ির সামনের দোকান থেকে রুটি কিনতে গেলে হাবিল হঠাৎ পেছন থেকে একটি লাঠি দিয়ে তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে নাহিল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

ইউসুফ আলী, তালতলী (বরগুনা)

Location :

Barguna
হাবিব ওরফে হাবিল খান (২৭)
হাবিব ওরফে হাবিল খান (২৭) |নয়া দিগন্ত

বরগুনার তালতলীতে ভাবিকে গলা কেটে হত্যার ১০ বছর পর এবার ছয় বছর বয়সী নাহিল আক্তারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে চাচা হাবিব ওরফে হাবিল খান (২৭) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ইদুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর রাতে নিহত শিশুর বাবা মো: দুলাল খান তালতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নাহিল স্থানীয় দুলাল খানের মেয়ে বলে জানা গেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত হাবিল নাহিলের চাচা এবং দুলাল খানের ছোট ভাই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বেশিভাগই পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ ও মারধর করতেন। মঙ্গলবার দুপুরে নাহিল বাড়ির সামনের দোকান থেকে রুটি কিনতে গেলে হাবিল হঠাৎ পেছন থেকে একটি লাঠি দিয়ে তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে নাহিল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পথে নাহিলের মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, হাবিল খান ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে তার বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেন। ওই সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে বিচার শেষে তাকে নয় বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর দেড় বছর না যেতেই সে আবার হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

নাহিলের বাবা দুলাল খান বলেন, ‘ও আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। প্রথমে আমার স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে, এখন আমার শিশু কন্যাকে পিটিয়ে মেরেছে। আমি এর বিচার চাই।’

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা: রকিবুল ইসলাম জানান, শিশুটির মাথা ও হাতে গুরুতর জখম ছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় দ্রুত বরিশালে পাঠানো হয়, তবে পথে তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো: টুকু শিকদার জানান, ঘটনার পর স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করলে তিনি এক বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শাহজালাল জানান, ঘটনার পরই হাবিলকে আটক করা হয়েছে। শিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।