প্রত্যেক ক্ষেত্রে ইসলামাইজেশন না হলে সেটা সৌন্দর্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. প্রফেসর শামসুল আলম।
তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ইসলামাইজেশন না করলে সেটা বিউটি হবে না। রাসূল সা:-এর যুগে মসজিদ ছিল জ্ঞানের আকড়। এজন্য জামে মসজিদ বলা হয়। জামে অর্থ হলো বিশ্ববিদ্যালয়। তখনকার প্রত্যেকটা মসজিদ ছিল একেকটা ইউনিভার্সিটি। মসজিদ থেকে যেহেতু পড়ানো হতো, সেহেতু সমাজটি ছিল সৌন্দর্যপূর্ণ।’
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মুলাটোল মদিনাতুল উলুম কামিল (এমএ) মাদরাসার কামিল শ্রেণির প্রথমবর্ষের পাঠদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মাদরাসাটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জাহেদ হোসেন খন্দকারের সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষনা কেন্দ্রের ডিন ড. প্রফেসর মোহাম্মদ অলি উল্ল্যাহ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমান বেলাল, মহানগর আমির এ টি এম আজমখান প্রমুখ।
ভিসি ড. প্রফেসর শামসুল আলম বলেন, ‘আমি ২৫ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। আমি নিজেই নিজের ওপর স্যাটিসফাইড। আমি নিজেই নিজের ওপর স্যাটিচসফাইড যে আমি ছাত্রদের পড়ানোর যোগ্যতা রাখি। আমাদের ক্লাসে একজন ছাত্রও অনুপস্থিত থাকে না। অন্য ডিপান্টমেন্টের ছাত্ররাও আমাদের ক্লাসে এসে ক্লাস করে। ক্লাসে শেষে হলে ছাত্র-ছাত্রীরা আরো সময় চায়। আমি মনে করি, শিক্ষক হিসেবে আমার এটা বিরাট তৃপ্তি। একজন শিক্ষক হিসেবে ক্লাসের মধ্যে আমাদের আকর্ষণ সৃষ্টি করতে হবে। এটা করলে দেখবেন আপনার মাদরাসায়ও ছাত্র আসবে, ক্লাসেও ছাত্র আসবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে ইসলামি শিক্ষার দিকে ফিরে আসতে হবে। ইসলামি শিক্ষাই এদেশের ভবিষ্যত। এদেশ পরিত্রাণ পাবে না, সরকারের ওপর সরকার আসবে, শিক্ষাব্যবস্থার জন্য কমিশন হবে, আমরা ভাইস চ্যান্সেলররা পরিবর্তন হবো, কিন্তু জাতির ভাগ্যাকাশ পরিবতিত হবে না যদি না আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ইসলামাইজন করতে পারি।’
ভিসি আরো বলেন, ‘এলেমের থেকে মজা পৃথিবীতে কিছু নেই। এজন্য আমরা ইন্টারমিডিয়েটে একটা প্রবন্ধে পড়েছি, রিডিং ফর প্লেজার। আনন্দের জন্য পড়া। পড়ার মধ্যে যদি আনন্দ ঢুকে যায়, শিক্ষকরা যদি পড়ার, মধ্যে ইলেমের মর্যাদা ঢুকিয়ে দিতে পারে। আর কিছু দরকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মসজিদে লেখা থাকে, এখানে রাজনৈতিক আলাপ করা হারাম। আমি বলে থাকি, এই কথাটাই ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। মসজিদে নববী থেকেই তো পৃথিবীর প্রথম কল্যাণ রাষ্ট্র পরিচালিত হয়েছে। এজন্য আমাদের শিক্ষা, অর্থনীতি, সমাজনীতি যদি মসজিদ থেকে দেয়া হয়, আমাদের সব কিছু কল্যাণকর হবে। এজন্য সে যুগে মসজিদের অধীনে ছিল সমাজ। আর এখন সমাজের অধীনে মসজিদ।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বেশি মেধাবি। তাদের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় বিষয়েও শিক্ষা নিতে হয়। বেশি করে ক্লাসমুখী হওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার নিবিড় অনুশীলন করতে হবে। তাহলেই মাদরাসা শিক্ষার্থীরা আলেম হওয়ার পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক, বিএসএস ক্যাডার হয়ে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে পারবেন।’
পরে শায়খুল হাদিস মোহাম্মদ আলী কামিল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সবক দেন। দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন মাদরাসার অধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।