বঙ্গপোসাগরে মাছ শিকারে যাওয়া ভোলার লালমোহন উপজেলার ১৪ জেলের সন্ধান মেলেনি ১৫ দিনেও। গত ১০ নভেম্বর লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির ‘মা-বাবার দোয়া’ নামে একটি ট্রলিংবোটে করে ওইসব জেলেরা মাছ শিকারে সাগরের উদ্দেশে রওনা দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর দুপুরে লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকা ও বাতিরখাল নামক মৎস্যঘাট এলাকা থেকে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে একটি ট্রলিংবোর্টে করে রওনা দেন ১৪ জেলে। ১১ নভেম্বর চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মৎস্যঘাট থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে সাগরের উদ্দেশে রওনা দেন তারা। যাত্রার পাঁচ দিনের মধ্যে তাদের আবার তীরে ফেরার কথা থাকলেও ১৫ দিনেও তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। এতে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছেন জেলে পরিবারগুলো।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার মো: ফারুক (৫৭), মো: মাকসুদুর রহমান (৪০), মো: খোকন (৩০), মো: হেলাল (২৮), মো: শামিম (২২), মো: সাব্বির (২৭), মো: সজিব (৩২), মো: জাহাঙ্গীর (৩৭), মো: নাছির মাঝি (৫০) এবং একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাতিরখাল এলাকার আব্দুল মালেক (৪৩), মো: ফারুক (৫২), মো: মাকসুদ (৪৮), মো: আলম মাঝি (৪৬) ও ৫২ বছর বয়সী মো: ফারুক মাঝি।
ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার নিখোঁজ জেলে মো: খোকনের স্ত্রী রিপা বেগম জানান, তার স্বামী সাগরে মাছ শিকার করে যে টাকা উপার্জন করতেন, তা দিয়ে দুই সন্তান এবং শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে সুন্দরভাবে সংসার চালাতেন।
তিনি বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে এখন আমার স্বামীর কোনো খোঁজ নেই। এখন শুধু দোয়া করি, সবাই যেন আমাদের মাঝে ফিরে আসেন।’
নিখোঁজ আরেক জেলে হেলালের স্ত্রী মিতু বেগম বলেন, স্বামী বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিলেন আমি যেন নিজের এবং সন্তানের খেয়াল রাখি। তাকে বলেছিলাম, আমি বাবার বাড়ি যাব। তিনি বলেছেন, সাগর থেকে ফিরে তিনিসহ একসাথে যাবেন। তাকে ছাড়া সন্তানসহ আমার এবং বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ির কী হবে? আমার স্বামীকে ফিরে পেতে সবার সহযোগিতা চাই।’
মাকসুদুর রহমান নামে নিখোঁজ অপর জেলের ছেলে মো: নয়ন জানান, তাদের খুঁজতে গত শনিবার একটি ট্রলারে করে সাগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনেরা। বিষয়টি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) মো: মাসুদ হাওলাদার জানান, এ ঘটনায় থানায় কেউ কোনো অভিযোগ বা জিডি করেননি। তবুও আমরা বিষয়টির খোঁজ রাখছি।
লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আলী আহমদ আখন্দ বলেন, জেলেদের নিখোঁজের সংবাদটি আমরাও পেয়েছি। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে ওইসব জেলেদের অবস্থান জানার চেষ্টা করছি। কোস্টগার্ড ও নৌ বাহিনী বিষয়টি অবহিত আছেন বলে জানিয়েছেন মৎস্য দফতরের এ কর্মকর্তা।
সূত্র : বাসস



