চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ প্রায় চার কোটি টাকা কাজের অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের(দুদক) একটি টিম ।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।
কক্সবাজার শাখার সহকারী পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্প সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। এসব উন্নয়ন প্রকল্প কাজের টেন্ডার জালিয়াতি ও উন্নয়ন কাজের নানাবিধ অনিয়ম, অসঙ্গতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইতিমধ্যে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত হয়ে এ অভিযান শুরু করেছি।’
তিনি আরো জানান, অভিযানের অংশ হিসাবে পার্কের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ গুলোর অনিয়ম, অসঙ্গতি সমূহ দেখার জন্য সরেজমিনে পরিদর্শন করতে এসেছি। এ সময় পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মঞ্জুর আলম চলমান ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের স্পট গুলো দেখানো হয়। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের কিছু কিছু কাজ ২৫/৩৫ ভাগ শেষ করা হয়েছে। চলমান এসব উন্নয়ন প্রকল্পের ওয়ার্কওড়ারের কাগজ ছাড়া আর কোনো ডকুমেন্ট সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা দেখাতে পারনি। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে সাফারি পার্কের চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা(ডিএফও) কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা হবে। এসব ডকুমেন্টস পর্যালোচনা করে টেন্ডার জালিয়াতি ও কাজের নানাবিধ অনিয়ম ও অসঙ্গতি খতিয়ে দেখে কমিশনের কাছে জমা দেয়া হবে। কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এক তথ্যে জানা যায়, বন্যপ্রাণী ব্যবস্হাপনা ও প্রাকৃতিক সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও) আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করেন। ওই টেন্ডারে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ এনে পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দ রেজওয়ানা হাসান বরাবরে অভিযোগ করেন কাজ বঞ্চিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পুরো টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে দেন। পরে চলতি সালের ২১ এপ্রিল দুইটি সাপ্লাই ও ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়। সে টেন্ডারও পূর্বের জাল-জালিয়তি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তা আমলে না নিয়ে তড়িঘড়ি করে বন্যপ্রাণী ব্যবস্হাপনা ও প্রকৃতিক সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও) ১ জুন প্রায় চার কোটি টাকার ছয়টি প্রকল্পের পৃথক পৃথক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে শতকরা ১০ শতাংশ কম দরে ওয়ার্কওড়ার দেয়া হয় এবং ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা কার্যাদেশে উল্লেখ রয়েছে। তবে চলতি অর্থ বছরের ৩০ জুন ওই প্রকল্পগুলোর ৩০ ভাগ কাজ শেষ না করলে ও ওই ছয় প্রকল্পের ১০ শতাংশে সাশ্রয়ী ৩৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার ভ্যারিয়েশন দেখিয়ে এ সব প্রকল্পের সাথে একিভুত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে শতভাগ কাজের বিল দেয়ায় এ অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।