ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা, দাফনের পাঁচ মাস পর আকাশের লাশ উত্তোলন

বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আজমের নেতৃত্বে সেনেরহুদা গ্রামের জান্নাতুল খাদরা কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।

মনিরুজ্জামান সুমন, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)

Location :

Chuadanga
নিহত আকাশ
নিহত আকাশ |নয়া দিগন্ত

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর রেলস্টেশনে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার ঘটনার পাঁচ মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী গাফফার আলী আকাশের লাশ।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে আদালতের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আজমের নেতৃত্বে সেনেরহুদা গ্রামের জান্নাতুল খাদরা কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।

এ সময় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২১ মে বিকেলে গাফফার আলী আকাশ অফিস শেষ করে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে খুলনাগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। তার দর্শনা হল্টে নামার কথা ছিল কিন্তু দামুড়হুদার জয়রামপুর স্টেশনের অদূরে চলন্ত ট্রেন থেকে তাকে ফেলে দেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর স্থানীয়রা রেললাইনের পাশে তার রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান।

ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় এটি একটি দুর্ঘটনা। কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ সেদিন রাতেই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। পরদিন তারা জানাজা শেষে সেনেরহুদা কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

তবে কয়েকদিন পর ট্রেনের যাত্রীদের মুখে ভিন্ন তথ্য উঠে আসে। তারা জানান, এটি দুর্ঘটনা নয় বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ওই তথ্যের ভিত্তিতে নিহতের বাবা জিন্নাত আলী গত ২৬ মে দামুড়হুদা আমলি আদালতে হত্যা মামলা করেন।

মামলায় ট্রেনের জুনিয়র টিটিই লালন চক্রবর্তী, জিআরপি এসআই পারভেজ, কনস্টেবল কাদের, অ্যাটেনডেন্ট মিলন, সোহাগ মিয়াসহ আরো কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ট্রেনে বিনা টিকিট যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা আদায়ে বাধা দেয়ায় আসামিদের সাথে আকাশের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে পরিকল্পিতভাবে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে তাকে হত্যা করা হয়।

এদিকে পিবিআইয়ের তদন্তে নতুন আলামত পাওয়া যাওয়ায় আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার তার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।