জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদের জননী হিসেবে শেখ হাসিনা দেশের সম্মান নষ্ট করেছে, বিদেশেও বাংলাদেশের সম্মান ও মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার সফর সঙ্গী এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ডিম নিক্ষেপ করে শুধু তাকে আঘাত করেনি বরং ২৪’র গণঅভ্যুত্থানের সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করেছে।’
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নীলফামারী জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আল-হেলাল অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত নীলফামারী-২ (সদর) আসনের দায়িত্বশীল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আবদুল হালিম বলেন, ‘তারা সেখানে আখতারকে জুলাই সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের জুলাই যোদ্ধা হিসেবে স্লোগান দেয়। তাহলে বুঝা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখনো অনুশোচনা আসে নাই। আমরা দাবি করব, তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে তার বিচার ত্বরান্বিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন ১৪, ১৮ ও ২৪-এর মতো হওয়ার আশঙ্কা মনে করে মানুষ। এ ৩টি নির্বাচনে বাংলাদেশের ৪ কোটি তরুণ ভোট দিতে পারে নাই। আমরা চাই উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই যেন ভোট দেন। ইতোমধ্যে দেশবাসী দেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে ভোট দিয়েছে। সেখানে ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য। এ ধরনের আকাঙ্ক্ষা জাতীয় নির্বাচনেও বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ পোষণ করেন।’
পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কোনো মনোনয়ন বাণিজ্য থাকবে না। এটা দলের জন্য, দেশের জন্য ও রাজনীতির জন্যও লাভ। এজন্য আগামীর নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতেই দিতে হবে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।‘
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘জামায়াতে ত্বরান্বিত নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে চায়। নতুন বাংলাদেশে আমিরে জামায়াতের স্লোগান হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে সৎ ও চরিত্রবান মানুষ প্রয়োজন। ভোটাররাই ঠিক করবে আগামী দিনে এ নতুন বাংলাদেশ কারা চালাবে। নির্বাচনী কাজে আমাদের সবাইকে ভূমিকা পালন করতে হবে। ভোটারদের কাছে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেয়ার মেসেজ দিতে হবে। প্রত্যেক ভোটারের কাছে পৌঁছে আমাদের আবেদন পেশ করতে হবে।‘
নীলফামারী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে দায়িত্বশীল কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দীন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ, নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমির ও নীলফামারী-১ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ড. খায়রুল আনাম ও নীলফামারী-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ।
কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য প্রভাষক ছাদের হোসেন, প্রভাষক আব্দুল কাদিম, প্রভাষক মনিরুজ্জামান জুয়েল প্রমুখ। এ সময় জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান মন্টু ও নীলফামারী সদর উপজেলা আমির মাওলানা আবু হানিফা শাহ উপস্থিত ছিলেন।