চুয়াডাঙ্গার চাঞ্চল্যকর পৃথক দু’টি হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ সময় প্রত্যেককে অর্থদণ্ডও দেয়া হয়।
আজ বুধবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আকবর আলী শেখ এ রায় ঘোষনা করেন। আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার এ দু’টি হত্যাকাণ্ডই জমি-জমা সংক্রান্ত জেরে ঘটেছিল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী ইউনিয়নের বামানগর গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে স্বাধীন আলী (৩৭)। একই মামলার অন্য আসামি চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের ফার্ম পাড়ার মরহুম বিপ্লব হোসেনের ছেলে আশিকুর রহমান আশিক ওরফে বাদশা (২৭)।
এছাড়া আরেকটি মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জীবননগর উপজেলার গঙ্গাদাশপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহিম মন্ডলের ছেলে জমির উদ্দীন (৪৮)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ৯ মে রাতে জমি-জমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরাধের জেরে একদল দৃর্বুত্ত কামাল হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। কামালের স্ত্রী বাড়ির বাইরে বের হলে তাকে রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ কামালকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই বছরের ১১ মে কামালের স্ত্রী সেলিনা আক্তার আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তদন্ত শেষে আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ইকরামুল হোসাইন গত ২০২২ সালের ৩১ জুলাই পাঁচজনকে আসামি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলার ১ নম্বর আসামি স্বাধীন আলী ও ৬ নম্বর আসামি আশিকুর রহমান বাদশা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারাক্তিমূলক জবাদবন্দি প্রদান করেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সন্দেহাতীতভাবে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার দায়ে তাদের দু’জনকেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। একইসাথে উভয় আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। ওই মামলা থেকে পাঁচজনকে খালাস দেয়া হয়।
এদিকে, ২০২২ সালের ১৬ জুন দুপুরে পূর্ব শক্রতার জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাব বাবলু রহমানকে কোদাল দিয়ে মাথায় আঘাত হত্যা করা হয়। সে দিনই নিহতের স্ত্রী চায়না খাতুন জীবননগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন জীবননগর থানার উপ পরিদর্শক সৈকত পাড়ে। এতে একমাত্র অভিযুক্ত ছিলেন জমির উদ্দিন। ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বাবলু হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার দায়ে জমির উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। একইসাথে তাকেও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মারুফ সারোয়ার বাবু জানান, এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। চাঞ্চল্যকর দু’টি হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসির আদেশ সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।