কাপড় চুরির অভিযোগে যুবককে কাঁঠাল গাছে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় কাপড় চুরির অভিযোগে এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের পরে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

Location :

Chuadanga
নির্যাতনের শিকার বজলু ফারাজী (৩৫)
নির্যাতনের শিকার বজলু ফারাজী (৩৫) |নয়া দিগন্ত

রাতের আধারে কাপড় চুরির অভিযোগে বজলু ফারাজী (৩৫) নামে এক যুবককে কাঁঠাল গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের পরে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবশেষে প্রাণভিক্ষা চেয়ে রেহাই মিলেছে ছেলেটির।

বর্বরযুগীয় কায়দার এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদি ইউনিয়নের খালপাড়া এলাকায়। নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা থেকে শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ওই যুবককে কাঁঠাল গাছে বেঁধে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের ওসমানপুর ফাঁড়ি পুলিশের নিকট তুলে দেয় ওই যুবককে।

নির্যাতনের শিকার বজলু ফারাজী (৩৫) উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের ফারাজীপাড়ার পচা ফারাজীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, হারদি গ্রামের খালপাড়ার কালু হোসেনের বাড়ি থেকে তার স্ত্রীর পরিহিত মেক্সি কাপড় চুরি হয়। ওই কাপড় অভিযুক্ত যুবক নিজেই পড়ে বিভিন্ন বাড়ির জানালা দিয়ে উকি মারে। বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ভুক্তভোগী কালু প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ঘুম থেকে ওঠেন। পরে তিনি লক্ষ্য করে প্রতিবেশী জসির বসতবাড়ির জানালা দিয়ে মেক্সি পরিহিত একজন উকি দিচ্ছে। সে গোপনে লক্ষ্য করে পিছন থেকে চোর সন্দেহে বজলুকে চেপে ধরে। তার চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে তাকে আটক করে কালুর বাড়ির পাশের একটি কাঁঠাল গাছে বেঁধে সারারাত নির্যাতন চালায়। মারপিটের একপর্যায়ে বজলুর পরিহিত মেক্সিতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে আগুন লাগাতে দেখা যায়। এসময় বজলু প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার দিতে থাকে।

চোর সন্দেহে নির্যাতনকারীদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হারদি ইউনিয়নের খালপাড়া ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাতের আধারে চুরি করতে বজলু নামে একজনকে আটক করে এলাকাবাসী। তবে তাকে ধরে অনেকে মারপিট করেছে। সকাল ৬টার দিকে আমি জানতে পারলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফাঁড়িপুলিশকে খবর দিয়ে তাকে প্রশাসনের জিম্মায় তুলে দিয়েছি।’

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক ও নির্যাতনের শিকার যুবক বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। দ্বৈত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’