দৈনিক নয়া দিগন্তে সংবাদ প্রকাশের পর মানবিক সহায়তা

নৌকায় বসবাসের কষ্ট ভুলে নতুন ঘরের ঠিকানা পেলেন বৃদ্ধ দম্পতি

নিজস্ব জমি না থাকায় স্থানীয় দিনমজুর আলম শেখ তার বাড়ির আঙিনায় বসবাসের জায়গা দিয়ে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এলাকাবাসী এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা

Location :

Raiganj
নৌকায় বসবাসের কষ্ট ভুলে নতুন ঘরের ঠিকানা পেলেন বৃদ্ধ দম্পতি
নৌকায় বসবাসের কষ্ট ভুলে নতুন ঘরের ঠিকানা পেলেন বৃদ্ধ দম্পতি |নয়া দিগন্ত

চারদিকে জলরাশি, মাঝখানে একটি ভাসমান নৌকা। ওই নৌকাতেই প্রায় ৩৫ বছর মানবেতর জীবন কাটিয়েছেন জামাত আলী (৬৫) ও তার স্ত্রী সখিনা বেগম।

ঝড়-বৃষ্টি, শীত আর রোদের সাথে লড়াই করে নৌকাকে ঘর বানিয়ে বেঁচে ছিলেন তারা। শেষ বয়সে এসে নিরাপদ আশ্রয়ের স্বপ্ন ছিল প্রায় অধরাই।

এই অসহায় দম্পতির জীবনকথা দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় প্রকাশিত হলে মানবিক সহায়তার জন্য এগিয়ে আসে হাউজ অফ মান্নান চ্যারিটেবল ট্রাস্ট।

ট্রাস্টের অর্থায়নে ও ‘প্রচেষ্টা সবার জন্য’ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা সাহবাজ খান সানির তত্ত্বাবধানে তাদের জন্য নির্মাণ করা হয় একটি টেকসই বসতঘর। ঘরের সাথে স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা যুক্ত করা হয় এবং চৌকি, লেপ-বালিশসহ প্রয়োজনীয় নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী দেয়া হয়।

নিজস্ব জমি না থাকায় স্থানীয় দিনমজুর আলম শেখ তার বাড়ির আঙিনায় বসবাসের জায়গা দিয়ে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এলাকাবাসী এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

নতুন ঘরে উঠতে পেরে আবেগাপ্লুত জামাত আলী বলেন, ‘জীবনের শেষ সময়ে একটা নিজের ঘর পাব, কখনো ভাবিনি।’

সখিনা বেগম বলেন, ‘নৌকার কষ্টের দিন শেষ হয়েছে, এখন নিরাপদে থাকতে পারছি।’

সাহবাজ খান সানি বলেন, ‘গণমাধ্যমের কারণেই আমরা তাদের কষ্টের কথা জানতে পেরেছি। স্থায়ী আশ্রয় মানুষের মৌলিক অধিকার।’

নৌকার অনিশ্চিত জীবন পেছনে ফেলে একটি ছোট্ট ঘর ফিরিয়ে দিয়েছে ওই বৃদ্ধ দম্পতির জীবনের নিরাপত্তা ও মর্যাদা, যা মানবিক সাংবাদিকতা ও সামাজিক সহানুভূতির উজ্জ্বল উদাহরণ।