হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী বলেছেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি আরকান আর্মিকে করিডোর দেয়ার জন্য নয়। কেউ যদি করিডোর বাস্তবায়নের দুঃসাহস দেখায়, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনুসসহ তার উপদেষ্টা পরিষদকে চরম মূল্য দিতে হবে।’
সোমবার (১২ মে) হেফাজতে ইসলাম নাটোর জেলা শাখার উদ্যোগে নাটোরের ভবানীগঞ্জ মোড়ে এক বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
সমাবেশে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কুরআনবিরোধী প্রতিবেদন বাতিল, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আলেম-ওলামা ও নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা সকল মামলা প্রত্যাহার, এবং ভারতীয় আগ্রাসন বন্ধের জোর দাবি জানানো হয়।
হেফাজতের নাটোর জেলা সভাপতি মুফতি আব্দুল্লাহ মাদানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এবং প্রধান আলোচক ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার।
এছাড়া আরো বক্তব্য দেন মুফতি আব্দুল মালেক, জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মুফতি ফায়সাল আহমদ হাবিব, মাওলানা মুজাজ্জাজ নাঈম, মাওলানা আহমদ মোস্তফা ও মুফতি আব্দুল আহাদসহ প্রমুখ।
মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির সুপারিশ কেবল শেখ হাসিনা ও তার অনুগতদের রক্ষা করতেই এসেছে। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। এই দেশে কুরআন ও সুন্নাহ-বিরোধী কোনো আইন থাকতে পারে না। নারী কমিশনের সুপারিশে আমরা লজ্জিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। যারা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে নাস্তিকতা জাতির ওপর চাপিয়ে দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কুরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন যদি অবিলম্বে বাতিল না করা হয়, তবে দেশের তাওহিদি জনতা দুর্বার গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে।’
প্রধান বক্তা মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি খুনি, সন্ত্রাসী ও গণহত্যাকারী দল। এই দলের তৎপরতা নিষিদ্ধ করলেই কেবল শান্তি ফিরবে। অথচ নয় মাস পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের বিচারে কোনো অগ্রগতি নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘যে রাষ্ট্র শাপলা চত্বরে শহীদদের বিচার করতে ব্যর্থ, সেই রাষ্ট্র আজ ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তাওহিদি জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসার ছাত্র, আলেম-ওলামা, ব্যবসায়ী, শ্রমিক সবাইকে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ইসলাম ছাড়া দুনিয়াতে মুক্তি নেই, আখিরাতে শান্তি নেই। তাই হেফাজতে ইসলামের ছায়াতলে এসে ঈমান রক্ষার আন্দোলনে শরিক হতে হবে।’
সমাবেশে নেতারা একযোগে ঘোষণা দেন, ‘যতক্ষণ না কুরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন ও ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক সকল প্রস্তাব বাতিল করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাওহিদি জনতা রাজপথ ছাড়বে না, ইনশা-আল্লাহ।