ময়মনসিংহে নিখোঁজের চার দিন পর শিশুর লাশ উদ্ধার

নিহত আইমান সাদাব পাশের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারগুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী আল আমিনের একমাত্র ছেলে বলে জানা গেছে।

রফিকুল ইসলাম খান, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ)

Location :

Gaffargaon
নিহত আইমান সাদাব
নিহত আইমান সাদাব |নয়া দিগন্ত

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নিখোঁজের চার দিন পর পুকুরপাড় থেকে আইমান সাদাব (৫) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পাগলা থানাধীন দিঘীরপাড় এলাকার বাড়ির পাশে একটি জঙ্গল ও পুকুরপাড় থেকে মাথা দ্বি-খণ্ডিত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত আইমান সাদাব পাশের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারগুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী আল আমিনের একমাত্র ছেলে।

ছোট থেকেই সে তার মা সুমাইয়া আক্তারের সাথে গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘীরপাড় (অতার বাড়ী) গ্রামের তার নানা সুলতান মিয়ার বাড়িতে বসবাস করত বলে জানা গেছে।

নিহত সাদাবের নানা সুলতান মিয়া জানান, গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির সামনে মাইকে শব্দ শুনে দোকানে গিয়েছিল। হঠাৎ তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে বাড়ির আশপাশের পুকুর-ডোবা ও স্বজনদের বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও আর পাওয়া যায়নি। এদিন রাতেই পাগলা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশী একজন গরু চরাতে গিয়ে এসে জানায়, জঙ্গলের সাইডে পুকুর পাড়ে দ্বি-খণ্ডিত এক শিশুর লাশ পড়ে আছে। পরে সেখানে গিয়ে সাদাবের লাশ শনাক্ত করেন তারা। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

নিহত সাদাবের আরেক নানা মোফাজ্জল হোসেন জানান, তাদের নাতি সাদাবকে বাড়ি সামনে থেকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা তাদের মুঠোফোনে প্রথমে ২০ হাজার টাকা ও পরে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দু’দফায় ২৭ হাজার টাকা পাঠানোর পর মুঠোফোনগুলো বন্ধ করে দেয় অপহরণকারীরা।

নিহত সাদাবের মা সুমাইয়া আক্তার বলেন, আমার একমাত্র নিষ্পাপ ছেলে কী অন্যায় করেছে। তাকে এভাবে অপহরণ করে দাবি করা টাকা নিয়েও চার দিন আটকে রেখে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে। আমাদের বুক খালি করেছে। আমি আমার নিস্পাপ ছেলে সাদাবের খুনিদের গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই।

পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনিব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুরে একই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরশাঁখচূড়া গ্রামে বাড়ি সামনে থেকে নিখোঁজ ১১ বছরের অপর শিশু শিক্ষার্থী, সৌদি প্রবাসী নূর ইসলামের ছেলে সিফাত হাসানের লাশ একদিন পর বাড়ির পাশে এক ব্যক্তির পুকুরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। চার দিনের ব্যবধানে পাশাপাশি এলাকায় প্রবাসীর দু’শিশু অপহরণের পর দু’শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।