শ্রীবরদীতে অসুস্থ স্ত্রীকে ‘জীবন্ত মাটি দেয়ার’ চেষ্টার ভিডিও ভাইরাল

ছেলের বউ ও এক নাতী বাড়িতে থাকলেও তারা বৃদ্ধ খোরশেদা বেগমের কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না। বৃদ্ধ স্বামীই রান্না-বান্নাসহ যাবতীয় কার্যক্রম করেন এবং স্ত্রীর সেবা করছেন।

এ জে এম আহছানুজ্জামান ফিরোজ, শ্রীবরদী (শেরপুর)

Location :

Sreebardi
স্ত্রীকে মাটিতে শুইয়ে রেখে গর্ত খুঁড়ছেন খলিলুর রহমান
স্ত্রীকে মাটিতে শুইয়ে রেখে গর্ত খুঁড়ছেন খলিলুর রহমান |সংগৃহীত

শেরপুরের শ্রীবরদীতে অসুস্থ স্ত্রীকে বাড়ির উঠানে জীবন্ত কবর দেয়ার চেষ্টা করেছেন বৃদ্ধ স্বামী খলিলুর রহমান। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর কানিপাড়া এলাকায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সারা জেলায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৮০ বছরের বৃদ্ধ মো: খলিলুর রহমানের স্ত্রী মোসা: খোরশেদা বেগম (৭০) দীর্ঘ ৭/৮ বছর ধরে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। একমাত্র স্বামীই তার সেবা-যত্ন করেন। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে দেশের বাইরে থাকে। ছেলের বউ ও এক নাতি বাড়িতে থাকলেও তারা বৃদ্ধা খোরশেদা বেগমের কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না। বৃদ্ধ স্বামীই রান্না-বান্নাসহ যাবতীয় কার্যক্রম করেন এবং স্ত্রীর সেবা করছেন। স্ত্রীর চিকিৎসা ও সেবা করতে করতে বৃদ্ধ খলিলুর রহমান হাঁপিয়ে ওঠেছেন। ঘটনার দিন শুক্রবার বিকেলে খোরশেদা বেগম বিছানায় মলত্যাগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী তাকে টেনে-হিঁচড়ে বাড়ির উঠানে নিয়ে গিয়ে কোঁদাল দিয়ে ছোট গর্ত খুঁড়ে মাটিচাপা দিতে থাকেন। এ ঘটনাটি তাদের নাতি খোকন (১৯) ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। এ ঘটনার নিন্দা জানান নেটিজেনরা।

এব্যাপারে এলাকাবাসীর অনেকেই বলেন, ঘটনার দিন হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে এমন কাজ করেছেন তিনি। তবে কাজটি তিনি ভালো করেন নাই।

শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আনোয়ার জাহিদ জানান, ‘খবর পাওয়ার পর সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। ঘটনার পর ওই বৃদ্ধ পলাতক রয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাবের আহমেদ বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পেরেছি বৃদ্ধ দীর্ঘদিন যাবত তার অসুস্থ স্ত্রীকে সেবা-যত্নসহ দেখভাল করে আসছেন। তার স্ত্রীর মল-মূত্র রাখার জন্য বাড়ির উঠানে একটি গর্ত করেন এবং রাগের বশেই তিনি এ কাজটি করেছেন। তার মেয়ের ঘরের নাতি ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। বৃদ্ধ দীর্ঘদিন যাবত সেবা করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছেন। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে দেশের বাইরে থাকে। তাদের দেখভালের জন্য লোক নাই। তাদের দেখভালের জন্য কোনো স্বহৃদয়বান ব্যক্তি যদি বৃদ্ধাশ্রমের ব্যবস্থা করেন, তাহলে তাদের জন্য ভালো হবে।’