স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকে হত্যা চেষ্টা

সিদ্ধিরগঞ্জে যুবলীগ কর্মী সরলসহ ৮ জনের নামে মামলা

সিদ্ধিরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে যুবলীগ ক্যাডার সরলসহ আটজনের নামে মামলা করা হয়েছে।

Location :

Siddirgonj
স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকে হত্যা চেষ্টা
স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকে হত্যা চেষ্টা |নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

সিদ্ধিরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা শাহ আলম শাহিনকে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলার আসামি যুবলীগ ক্যাডার সরলসহ আটজনের নামে মামলা করেছেন তার বাবা আব্দুর রশিদ মোল্লা।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়।

আহত শাহ আলম শাহিন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি দক্ষিণ সানারপাড় এলাকার আব্দুর রশিদ মোল্লার ছেলে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় পরিবহন টিকিট কাউন্টারের চাঁদাবাজী নিয়ন্ত্রণ ও দাবি করা ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না দেয়ায় তাকে ধরে নিয়ে মিতালি মার্কেটের ১ নম্বর ভবনের ছাদে তুলে মারধর করা হয়।

অভিযুক্ত যুবলীগ কর্মী সরল (৪০) নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেবপাড়া এলাকার নাদিমের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মারামারি ও ছিনতাই ডাকাতিসহ সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা থানায় ১১টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে সাহেবপাড়া ও সাইনবোর্ড এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই ডাকাতিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও সরল তার বাহিনী নিয়ে এলাকায় বহালতবিয়তে রয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িত তার ভাই নিশাদ জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন ছাত্র সমাজের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের অন্যতম ক্যাডার। তিনিও রয়েছেন বহালতবিয়তে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শাহ আলম শাহিন সাইনবোর্ড এলাকায় বাসের টিকিট বিক্রির পাশাপাশি একটি চায়ের দোকান দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। এতে বাধা দিয়ে দোকান দিতে হলে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে সরল। অন্যথায় সাইনবোর্ড এলাকায় ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। শাহিন চাঁদা দিতে অস্বীকার করে। তার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে সরলের ভাই নিশাদ (২৮), সহযোগী সুমন (৩৫), মেহেদী(২৮), হেলাল ফরাজী (৪৫), রুদ্র (২৫), রানা (২৫) ও মিলন (৩৫) মিলে সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শাহিন মিয়াকে টেনে হেচড়ে একটি প্রাইভেটকারে উঠিয়ে মিতালী মার্কেটের ১ নম্বর ভবনে তাদের টর্চার সেলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে লোহার পাইপ, হকিস্টিক দিয়ে পিটায়। এতে শাহিন গুরুতর আহত হয়ে পড়লে তাকে সানারপাড় এলাকার পিডিকে পাম্পের পাশে ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে লোকমারফত খবর পেয়ে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।

স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা শাহ আলম শাহিন বলেন, ‘মারপিট করার সময় সরলের পায়ে ধরে জীবন ভিক্ষা চাই। যেভাবেই হোক ২-৩ দিনের মধ্যে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেই। এ ঘটনায় যেন আইনের আশ্রয় না নেই এবং প্রকাশ না করি এ শর্তে আমাকে জীবনে না মেরে রাত ১ টার দিকে পিডিকে পাম্প এলাকায় এনে ছেড়ে দেয়।

তার আগে আমার হাতে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তারা ভিডিও করে রাখে। হুমকি দেয় এনিয়ে মুখ খুললে এ ভিডিও প্রশাসনের কাছে দিয়ে আমাকে ছিনতাইকারী বানিয়ে দিবে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সরলের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকেই তিনি ও তার বাহিনী গা ঢাকা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়। তার মোবাইল নাম্বারে ফোন করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুর আলম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করি। এসময় অভিযুক্ত কাউকে পাইনি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’