নগদ টাকা ও স্বর্ণলাঙ্কারের লোভে আপন মামী জুলেখা বেগম (৫৫) ও মামাতো বোন তানহা আক্তার মীম (২০)কে নৃশংসভাবে খুন করেছে রামগঞ্জ পৌর ১নম্বর ওয়ার্ড সোনাপুর মহাদড় বাড়ীর মরহুম আবদুল করীম ও ফেরদৌসি বেগম পাখির ছেলে সৌদি প্রবাসী পারভেজ হোসেন (৩৫)।
রামগঞ্জ থানা ও লক্ষ্মীপুর ডিবি পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জুলেখা বেগমের স্বামী মিজানুর রহমানের বোনের ছেলে সৌদি ফেরত পারভেজ হোসেনকে ঢাকার তুরাগ এলাকার ওয়ার্কশপ থেকে আটক করে।
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার আকতার হোসেন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে জানান আটক পারভেজ হোসেন হত্যাকাণ্ডের শিকার জুলেখা বেগমের স্বামী মিজানুর রহমানের ভাগিনা ও তানহা আক্তার মীমের আপন ফুপাতো ভাই।
গত মাস দুয়েক আগে পারভেজ হোসেন সৌদি আরব থেকে বাড়ীতে আসলেও রামগঞ্জে না গিয়ে শশুর বাড়ী লক্ষ্মীপুর জেলা সদরে বসবাস করে আসছে। প্রবাসে থাকলেও পারভেজ ঋণের কিস্তিসহ আর্থিক সমস্যায় ভুগছিলো।
ঘটনার দিন ৯ অক্টোবর শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পারভেজ হোসেন রামগঞ্জ শহরের একটি দোকান থেকে ছুরি ক্রয় করে ৫নম্বর চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর চন্ডিপুর গ্রামের খামার বাড়ীর মামা মিজানুর রহমানের দ্বিতল বাসভবনে প্রবেশ করে। এসময় মামাতো বোন তানহা আক্তার মীম পারভেজ হোসেনকে বাড়ীর দ্বিতীয় তলার একটি রুমে নিয়ে আমড়া কেটে খেতে দেয়। এক পর্যায়ে পারভেজ হোসেন কোমর থেকে ছুরি বের করে তানহা আক্তার মীমকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে নিচের আরেকটি রুম থেকে মামী জুলেখা বেগমকে ডেকে দোতলার তানহা আক্তার রুমে নিয়ে যায়। এসময় মেয়ের রক্তাক্ত দেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিলে পারভেজ হোসেন মামী জুলেখা বেগমকে আমড়ার প্লেট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আঘাতের কারনে জুলেখা বেগম ফ্লোরে পড়ে গেলে রুমে থাকা টি-টেবিল দিয়ে জুলেখা বেগমকে পুনরায় এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এক পর্যায়ে তার সাথে থাকা ধাঁরালো ছুরি দিয়ে ফের গলায় ও মুখে উপুর্যপরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
খুন করার পর আরেকটি রুম থেকে শাবল সংগ্রহ করে স্টীলের আলমিরা ভেঙ্গে স্বর্ণালঙ্কার ব্যাগে নিয়ে ঘাতক পারভেজ নিজের জামা কাপড়পাল্টে মৃত জুলেখা বেগমের ছেলে ফরহাদ হোসেন রাব্বীর গেঞ্জি ও প্যান্ট পরে পাশ্ববর্তী পুকুরে শাবল, হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও প্লেট ফেলে দেয়।
পুলিশ সুপার আকতার হোসেন আরো জানান, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আমরা আটক করি। পারিবারিক তথ্য ও তদন্ত করে ঘটনার মূল হোতা পারভেজ হোসেনকে ঢাকার তুরাগ এলাকা থেকে আটক করি।
তিনি আরো জানান, আটক পারভেজ হোসেনের দেয়া তথ্যমতে লুটকৃত স্বর্ণালঙ্কার, পরিধেয় বস্ত্র, শাবল উদ্ধার করি। সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে।