শাহবাগের নয় সংসদের মাধ্যমে সংস্কার করতে হবে : ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল

বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহাবুব শ্যামল
ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহাবুব শ্যামল |নয়া দিগন্ত

শাহবাগের সংস্কার নয় সংসদের মাধ্যমে সংস্কার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ও নবগঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহাবুব শ্যামল।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে আয়োজিত আনন্দ মিছিল শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টেংকেরপাড়ে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল বলেন, ‘অর্ন্তবর্তী সরকার একেক সময় একেক কথা বলছেন। তারা বিভিন্ন সংস্কারের কথা বলছেন। অর্ন্তবর্তী সরকার যত সংস্কারের কথা বলছেন তা তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচিতেই রয়েছে। তারপরেও যদি কোনো সংস্কার করেন সেটি হল সঠিক নির্বাচনের সংস্কার। সেই সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। জনগণ যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। আগামী দিনে এই নির্বাচিত সরকার সকল সংস্কার করবে। এই শাহবাগের সংস্কার বাদ দিয়ে আগারগাঁও যে আমাদের সংসদ আছে সেই সংসদের মাধ্যমে সকল সংস্কার করুন।’

নবনির্বাচিত জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি জহিরুল হক খোকন, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার খোকন, অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান মঞ্জু, এ বি এম মোমিনুল হক, জসিম উদ্দিন রিপন, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান শাহিন, সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, বিএনপি নেতা কবীর আহমেদ প্রমুখ।

দলীয় নেতাকর্মীদেরকে আগামী নির্বাচনে আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ধৈর্য ধারনের আহ্বান জানিয়ে সমাবেশে ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল আরো বলেন, ‘আমরা বিএনপি কর্মীরা এমন কোনো কাজ করবো না যাতে করে আমরা সাধারণ জনগণ থেকে দূরে সরে যাই। এই আওয়ামীলীগ তিনটি নির্বাচন ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জনগণ ছাড়াই ভোটার বিহীন নির্বাচন করে সম্পূর্ণভাবে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে জুলাই আগস্টের আন্দোলন। এই আন্দোলনে দলীয় নেতাকর্মীরাও তাদের সাথে ছিল না। এই আন্দোলন মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিদায় হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রাজনীতিবিদদের জন্য একটি শিক্ষা হয়েছে। ভবিষ্যতে যারা এই জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, জনগণ বিরোধী যারা কাজ করবে, তাদের পরিণতি এরকমই হবে।’

এর আগে পূর্ব ঘোষিত আনন্দ মিছিলে অংশ নিতে বিকেল ৩টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ মাঠে জেলার নয় উপজেলা থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত রঙ বেরঙের বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে উপস্থিত হয়। বিকেল ৪টার দিকে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে আনন্দ র‌্যালি বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহরের টেংকের পাড় পৌঁছে।

২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর জিল্লুর রহমানকে আহ্বায়ক করে জেলা বিএনপির ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। ২০২৩ সালের ২৯ মে জিল্লুর রহমানের মৃত্যু হয়। এরপর ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট জেলা বিএনপির পাঁচ সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। ওই পাঁচ সদস্যের কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বিরোধ না মিটিয়েই ২০২৪ সালের ২ নভেম্বর আবার ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।

২০২৩ সালের আগস্ট থেকে দুই পক্ষ পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছিল। চলতি বছরের ৯ মে ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলকে সভাপতি এবং সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে সাধারণ সম্পাদক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।