নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইউসুফগঞ্জ স্কুলের ছাত্রী সুবর্ণাকে ধর্ষণ ও হত্যার সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচার সম্পন্ন হয়নি। এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে পূর্বাচল উপশহরের ১ নম্বর সেক্টরে ইউসুফগঞ্জ স্কুলের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে ইউসুফগঞ্জ স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুবর্ণাকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। এরপর মামলা হলেও দীর্ঘ সাত বছরেও বিচার সম্পন্ন না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
মানববন্ধনে সুবর্ণার বাবা বলেন, ‘আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। বিচার চাইতে গিয়ে আজ আমি নিজেই হুমকির মুখে। মামলা তুলে নিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল, সাব্বির, শান্তসহ আসামিপক্ষের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে।’
সুবর্ণার চাচা মো: রাশেদ বলেন, ‘২০১৮ সালে আমার চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে সূর্বনাকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার বিচার চেয়ে আমরা মামলা করি। কিন্তু মামলা তুলে নিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল, সাব্বির, শান্তসহ তাদের সহযোগী আসামিপক্ষের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিল।
তিনি আরো বলেন, গত শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে পূর্বাচলের অফিস থেকে আমাকে অপহরণ করে একটি পরিত্যক্ত বাগানবাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে তারা ৭০ লাখ টাকা দাবি করে। আমার পরিবার বিষয়টি জরুরি নাম্বার ৯৯৯ ফোন দিয়ে জানালে অপহরণকারীরা পরিস্থিতি টের পেলে আমাকে আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থানায় সোপর্দ করতে চায়। পরে পুলিশ তাদের আটক করে।
এ বিষয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা সুবর্ণার বন্ধু। তার জন্য বিচার চাইতে এসেছি। আমরা চাই, আর কোনো সুবর্ণার এমন পরিণতি না হোক। দ্রুততম সময়ে আসামিদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দেয়া হোক।’
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মানবাধিকার কর্মী ও এলাকাবাসীরাও দ্রুততম সময়ে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, ‘শুক্রবার দুপুরে যুবদল নেতা রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে আট থেকে ১০ জনের একটি দল রাশেদের অফিসে গিয়ে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতে ভিকটিমকে উদ্ধার করি এবং ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে গ্রেফতার করি।’
তিনি আরো জানান, ‘গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের আলোচিত ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে অপহরণ ও মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইনিব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।