বেনাপোল পোর্ট থানার ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রেজওয়ান গুমের মামলার তদন্ত শুরু

দীর্ঘ ৮ বছর পর বেনাপোল পোর্ট থানার ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান গুম হওয়ার তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের সদস্যরা।

বেনাপোল (যশোর) সংবাদদাতা

Location :

Jashore
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রেজওয়ান গুমের মামলার তদন্ত শুরু
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রেজওয়ান গুমের মামলার তদন্ত শুরু |নয়া দিগন্ত

দীর্ঘ ৮ বছর পর বেনাপোল পোর্ট থানার সাবেক ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান গুম হওয়ার তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের সদস্যরা।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টার সময় ট্রাইবুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি বেনাপোল ভূমি অফিসের সামনে স্থানীয়দের নিকট থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এসময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা ট্রাইবুনালের তিন সদস্যকে তথ্য উপাত্তের বিষয়ে সহায়তা করেন।

রেজওয়ান বেনাপোল পোর্ট থানার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে।

রেজওয়ানকে গত ৪/৮/২০১৬ ইং তারিখে বেনাপোল ভূমি অফিসের নিকট থেকে সাদা পোশাকের লোকজন ধরে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে তার পরিবারের সদস্যরা বার বার বেনাপোল পোর্ট থানায় ওসি অপুর্ব হাসানের নিকট সাধারণ ডায়েরি এবং রেজওয়ানকে উদ্ধারের বিষয়ে আকুতি মিনতি করেন। ওসি অপুর্ব হাসানের পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে থানা থেকে কয়েক দফা বের করে দেয়। এবং তাদের গুলি করে বালির নীচে পুতে রাখারও হুমকি প্রদান করে।

রেজওয়ানের পরিবার বুঝতে পেরেছিল রেজওয়ানকে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি অপুর্ব হাসানের নির্দেশে গুম করা হয়েছে। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে রেজওয়ানের গুম হওয়ার ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানায় কোনো মামলা হয়নি।

এরপর তারা থেমে থাকেনি। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর বেনাপোল পোর্ট থানায় রেজওয়ানের ভাই রিপন বাদি হয়ে ওসি অপুর্ব হাসান তদন্ত ওসি খন্দকার শামিম আহমেদ ও এস আই নুর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন গত ৫/০৯/২৪ তারিখ। যার মামল নম্বর ৩/২৯, তারিখ ৫/০৯/২৫। এজাহারে বিজ্ঞ আদালতের সিআর নম্বর ০১ তারিখ ২৮/০৮/২০২৪ স্মারক নং ২৩৬/২৪ থানায় প্রাপ্ত হয়ে মামলা রুজু হয়।

রেজওয়ানের ভাই রিপন ও বাইজিদ বলেন, তার ভাই শার্শার বাগআঁচড়া আফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের একজন ছাত্র ছিল। সে ওই কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ছিল। বেনাপোল ভূমি অফিসের পাশে মাদরাসার মেসে সে থাকত। সে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। এরপর তাকে কেন কি কারণে ওসি অপুর্ব হাসানের নির্দেশে নুর আলম নিয়ে যায় আমরা জানি না। সেই থেকে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর ওসি থানায় তার বিষয়ে গেলে গুলি করে বালির মধ্যে পুতে রাখবে বলে হুমকি দেয়। এঘটনায় তিনি অপুর্ব হাসানসহ ওই তিনজনের ফাঁসি দাবি করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনের নিকট রিয়াজুল ইসলাম, হযরত আলী, হাসান আনোয়ারুল মো: তাহাজ্জত হোসেন হাফিজা খাতুনসহ অনেকে সাক্ষী প্রদান করেছেন। তদন্তের স্বার্থে আপাতত সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রকাশ করেন নাই তদন্ত কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে ওসি অপুর্ব হাসান পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয় নিয়ে এস আই নুর আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমাকে অযথা এসব মামলায় জড়াচ্ছে। আমি এসব কার্যক্রমের সাথে জড়িত নই।’