খুলনায় স্বামী হত্যার বিচারের দাবিতে স্ত্রী ও পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) পরিবারের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে নিহত জাহিদুল ইসলাম স্ত্রী ছবিরন নেসা, মা মজিদা খাতুন, মেয়ে ও ভাই-বোনরা উপস্থিত ছিলেন।

কয়রা (খুলনা) সংবাদদাতা
সংবাদ সম্মেলন করছেন নিহত জাহিদুলের পরিবারের সদস্যরা
সংবাদ সম্মেলন করছেন নিহত জাহিদুলের পরিবারের সদস্যরা |নয়া দিগন্ত

খুলনায় কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত জাহিদুল ইসলামকে হত্যার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের স্ত্রী ছবিরন নেছা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) পরিবারের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে নিহত জাহিদুল ইসলাম স্ত্রী ছবিরন নেসা, মা মজিদা খাতুন, মেয়ে ও ভাই-বোনরা উপস্থিত ছিলেন।

নিহত জাহিদুল ইসলাম কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নে মরহুম জালাল গাজীর ছেলে বলে জানা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ছবিরন নেছা বলেন, আমার স্বামী জাহিদুল ইসলাম একজন দিনমজুর। শৈশব থেকেই তিনি বাবার সাথে দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল কাদের মোল্যার রায়কে কেন্দ্র করে কয়রা উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে জামায়াতে ইসলামীর অফিস চত্বরে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।

ওই সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা তমিজউদ্দিন ও উপজেলা জামায়াতের আমির প্রফেসর সোহরাব হোসেনের নেতৃত্বে সমাবেশ শেষ করে কয়রা উপজেলা জামায়াতের ব্যানারে শান্তিপূর্ণ মিছিলটি জালালের মোড়ে এলেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সোহরাব আলীর সানার নির্দেশে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা চর্তুমুখী হামলা চালায়।

তাদের এলোপাথাড়ি মুহুর্মুহু গুলি বর্ষণ ও হাতবোমা বিস্ফোরণ আমার স্বামীসহ অনেকেই আহত হন। আমার স্বামী জাহিদুল ইসলাম গায়ে, হাত ও পায়ের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ঝলসে যায়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার স্বামীসহ আহত ব্যক্তিদের কোনো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে দেয়নি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গাড়ি আটকিয়ে আবারো হামলা করে। পরবর্তীতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে আমার স্বামী জাহিদুল ইসলাম মারা যান।

তিনি বলেন, বিগত সময়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে-দ্বারে ঘুরলেও স্বৈরাচার সরকার ও তার দোসরদের ভয়ে কেউই আমাদের সহযোগিতা করতে রাজি হয়নি। আমার স্বামী মৃত্যুবরণ করলে বিচারের দাবিতে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করি কিন্তু আওয়ামী লীগের তাণ্ডবে আমার বাবা ও শ্বশুরবাড়ি লোকজন ভিটাবাড়ি ছাড়া হয়ে যায়। তাই বর্তমান সরকারের কাছে আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। স্বৈরাচার সরকার ও তার দোসরদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানাই।