উল্লাপাড়ায় ৬ কোটি টাকা নিয়ে উধাও রুপসী বাংলা সমবায় সমিতি, নিঃস্ব ২৬০ পরিবার

‘রুপসী বাংলা সমিতিতে সাধারণ মানুষ এফডিআর করছে, তা আমাদের জানা ছিল না। কেউ যদি আগে জানাতো, তাহলে আমরা নিষেধ করতাম।’

মো: জাকিরুল হাসান, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ)

Location :

Ullahpara
উল্লাপাড়ায় ৬ কোটি টাকা নিয়ে উধাও রুপসী বাংলা সমবায় সমিতি, নিঃস্ব ২৬০ পরিবার
উল্লাপাড়ায় ৬ কোটি টাকা নিয়ে উধাও রুপসী বাংলা সমবায় সমিতি, নিঃস্ব ২৬০ পরিবার |নয়া দিগন্ত

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ‘রুপসী বাংলা পল্লী উন্নয়ন সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি’ নামে একটি সমবায় সংগঠন ২৬০ জন সদস্যের প্রায় ৬ কোটি টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। গ্রামাঞ্চলে অধিক মুনাফা, ক্ষুদ্রঋণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়ে গঠিত এই সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালালেও এর বিরুদ্ধে কোনো নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সমবায় দফতরের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার বালসাবাড়ি এলাকায় প্রায় ১৫ বছর আগে সমিতিটি গঠন করেন আল আমিন, জাহাঙ্গীর, হাসান, মিজান, মালেক ও আব্দুল মান্নান নামে ছয় ব্যক্তি। প্রথমদিকে ঋণ কার্যক্রম চালালেও পরে এনজিও সেবার মোড়কে লোকজনকে মোটা অঙ্কের এফডিআর করতে উৎসাহিত করেন তারা। প্রতি লাখ টাকায় ১২০০ টাকা মুনাফার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী ইমতেকার হোসেন রুবেল, হাজি আব্দুল কুদ্দুস, মোহাম্মদ আলী, রিপন ও মোতালেব হোসেন বলেন, ‘প্রথমে তারা সঠিকভাবে টাকা লেনদেন করতো, নিয়মিত লাভ দিত। পরে সদস্য সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে টাকা জমা হতে থাকে। একসময় অফিসে তালা ঝুলিয়ে তারা সবাই পালিয়ে যায়।’

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ১৮ জন ভুক্তভোগী আদালতে মামলা করেছেন। কিন্তু অভিযুক্তদের কোনো সন্ধান মেলেনি এখনো।

বালসাবাড়ি এলাকার এই সমিতিটি সমবায় অধিদফতর থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে স্থানীয় সমবায় অফিস। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘যদি সমবায় অফিস নিয়মিত তদারকি করত, তাহলে এত বড় ক্ষতির শিকার হতে হতো না। লাইসেন্স দিয়েই দায়িত্ব শেষ করলে আমরা কার কাছে যাব?’

উল্লাপাড়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মারুফ হাসান জানান, ‘রুপসী বাংলা সমিতিতে সাধারণ মানুষ এফডিআর করছে, তা আমাদের জানা ছিল না। কেউ যদি আগে জানাতো, তাহলে আমরা নিষেধ করতাম।’

তিনি আরো জানান, সমিতির বিরুদ্ধে অভিযোগের পর তাড়াশ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মাদ হাসনাত ছুটিতে থাকায় নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার ভূমি শারমিন সুলতানা বলেন, ‘ইউএনও স্যার ছুটিতে আছেন, বিষয়টি তিনি জানতে পারেন, বিষয়টা আমার জানা নাই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’