ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভুঞা ইউনিয়নের শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষ নদীর তোড়ে ভেঙে পড়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে বিদ্যালয়ের মাঠ ও শহীদ মিনার। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
আজ সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৯৫১ সালে স্থানীয় বাসিন্দা রহিম উল্যাহ চৌধুরীর প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টির ভবনের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও মুছাপুর ক্লোজার ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় ছোট ফেনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবনের উত্তর পাশে ও লাগোয়া শহীদ মিনারে ফাটল দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেরিনা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের গ্রুপ বিষয়গুলোর ক্লাস এই ভবনে হয়। প্রতিদিন আতঙ্কে থাকি, কখন যেন পুরো ভবন নদীতে তলিয়ে যায়। প্রশাসনের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি।’
বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সমাজসেবক জহিরুল কাইয়ুম রাহাত বলেন, ‘নদী ভাঙনের ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। শতবর্ষের কাছাকাছি এ প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্টদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হারিছ আহমদ পেয়ার বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে হাজারো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। ভবনটি নদীতে বিলীন হলে তাদের শিক্ষাজীবনে বড় বিঘ্ন ঘটবে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
প্রধান শিক্ষক গোলাম বাছির ভূঞা জানান, ‘ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। লাইব্রেরি, নামাজের কক্ষ ও দু’টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে এতে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন আজাদ বলেন, ‘ভবনটি পুনঃনির্মাণে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি নিজেই সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পাঠদান বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: ফুয়াদ হাসান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেছি। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, শিগগিরই কাজ শুরু হবে।’
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: শাহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবন রক্ষায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।’