পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী, জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী বলেছেন, গত ১৬ বছর ধরে জামায়াতকে ঘিরে এমন কোনো প্রচার অব্যাহত রাখা হয়নি, যা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়নি। দলটিকে সামাজিকভাবে কোণঠাসা করা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অঙ্গনে হেয় প্রতিপন্ন করার নানা উদ্যোগ চলমান রয়েছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টাযর দিকে পিরোজপুর সাঈদী ফাউন্ডেশনের আল্লামা সাঈদী অডিটোরিয়ামে পৌর জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে ভোট কেন্দ্র প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার তজবিহ হাতে জামায়াত-শিবিরকে কটাক্ষ করতো, সব সময় তাদের পিছনে লেগেই থাকতো। ঠিক একই পথে বিএনপিও হাঁটছে। এটা শুধু মালিকানার পরিবর্তন হয়েছে,তসবিহ ঠিকই আছে। বাংলাদেশের কোথাও কিছু ঘটলে জামায়াত-শিবিরের উপর দায় চাপানো হয়। আমরা ন্যায়ের পথে আছি বলেই আমাদের সফলতা দিন দিন বেড়েই চলছে। খুনী হাসিনা আমাদের অভিভাবকদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মেরেছে,ভাইদেরকে গুলি করে মেরেছে,এত কিছু করেও আমাদেরকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, ভবিষ্যতে ও কেউ পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মৎস্য সম্পদ,খনিজ সম্পদ, মানবসম্পদ সহ সকল সম্পদের অভাব না থাকলেও দুর্নীতির কারণে আমরা পিছিয়ে আছি। আমাদের শুধুমাত্র সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব। আগামীতে সৎ, যোগ্য, দেশ প্রেমিক কোরআন প্রেমী নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ সঠিক পথে পরিচালিত হবে, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
ডাকসু নির্বাচনকে উল্লেখ করে বলেন, ‘১০৪ বছরের ইতিহাসে ২৮ টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে ছাত্রশিবিরের যোগ্য নেতৃবৃন্দ বিজয় ছিনিয়ে ইতিহাস রচনা করেছে, এটা তাদের আদর্শ, সততা,আচার আচরণের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। আমাদের ঈমান মজবুত আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মন তারা জয় করতে পেরেছে।’
তিনি আগামী নির্বাচনকে উল্লেখ করে বলেন, ‘পিরোজপুর ১,২,৩ এই তিনটি আসন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিপুল ভোটে বিজয় ছিনিয়ে আনবে। মনে রাখতে হবে আগামী সংসদ নির্বাচন আগামী মাসে হবে এটা মনে করে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবেন না, কেউ আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’
তিনি পিআর পদ্ধতি উল্লেখ করে বলেন, ‘১৯৭১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের যতগুলো নির্বাচন হয়েছে এবং সে সকল নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়েছেন তা পর্যালোচনা করে দেখা যায় তারা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, বাকি ৬৫ ভাগ ভোটারদের কোন মতামতের প্রয়োজন ছিল না। ৩৫ ভাগ ভোট পেয়ে সংসদে বসে আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন গঠন করে দেশ চালিয়েছেন। আমরা সকল জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ চালাতে চাই বলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। তারা চায় না বলে পি আর পদ্ধতিকে ভয় পায়।’
ভোট কেন্দ্র প্রতিনিধি সম্মেলনে পৌর আমির মাওলানা মো: ইসহাক আলী খানের সভাপতিত্বে এবং পৌর সেক্রেটারি মাওলানা শেখ আব্দুর রাজ্জাক এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামী আমির অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসেন ফরিদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব সহ জামায়াতে ইসলামীর জেলা উপজেলা ও পৌরসভার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।