উখিয়ায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিদর্শনে যুক্তরাজ্যের উন্নয়নমন্ত্রী

তিনি শিক্ষা, নারী উন্নয়ন, খাদ্য বিতরণ ও জীবিকা উন্নয়নসহ চলমান মানবিক কর্মসূচিগুলো ঘুরে দেখেন।

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া (কক্সবাজার)

Location :

Cox's Bazar
রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন যুক্তরাজ্যের উন্নয়নমন্ত্রী
রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন যুক্তরাজ্যের উন্নয়নমন্ত্রী |নয়া দিগন্ত

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিদর্শন করছেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যান।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে তিনি এ সফর শুরু করেন।

জানা যায়, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা থেকে বিমানে কক্সবাজার পৌঁছে ব্যারোনেস চ্যাপম্যান প্রথমেই জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তাদের সাথে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৭-এর উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে পৌঁছে তিনি শিক্ষা, নারী উন্নয়ন, খাদ্য বিতরণ ও জীবিকা উন্নয়নসহ চলমান মানবিক কর্মসূচিগুলো ঘুরে দেখেন।

দিনের শুরুতেই যুক্তরাজ্যের এ উন্নয়নমন্ত্রী ইউনিসেফ ও ফ্রেন্ডশিপের সহায়তায় পরিচালিত একটি লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন। তিনি রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ, পাঠদানের পদ্ধতি ও শিক্ষাসামগ্রী ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। পরে তিনি নারীবান্ধব স্থান (উইমেন-ফ্রেন্ডলি স্পেস) পরিদর্শন করেন, যেখানে রোহিঙ্গা নারীরা গৃহস্থালি বাগান, হস্তশিল্প ও ক্ষুদ্র উদ্যোগের মাধ্যমে কিভাবে স্বনির্ভর হচ্ছেন তা পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় তিনি তাদের অভিজ্ঞতা শোনেন এবং তাদের উৎসাহিত করেন।

এরপর ব্যারোনেস চ্যাপম্যান বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি’র (ডব্লিউএফপি) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি খাদ্য সহায়তার প্রক্রিয়া ও উপকারভোগীদের মতামত নেন। উপকারভোগীরা মন্ত্রীকে জানান, কীভাবে নিয়মিত খাদ্যসামগ্রী পেয়ে তারা তাদের পরিবার পরিচালনা করছেন।

এদিকে দুপুরে তিনি মধুছড়া এলাকায় যান এবং সেখানে জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী সংস্থা ও এলএসডিএস’র সহায়তায় পরিচালিত সাবান উৎপাদন ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। প্রকল্পে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ একসাথে কাজ করছেন—এ মডেলটিকে তিনি প্রশংসা করেন।

সফরে মন্ত্রীর সাথে রয়েছেন তার বিশেষ উপদেষ্টা অ্যামেলি গেরিকে, বাংলাদেশে নিযুক্ত উপ-উচ্চ কমিশনার জেমস গোল্ডম্যান, মানবিক সহায়তা দলের প্রধান এলি মুডি, মানবিক উপদেষ্টা মারিনেলা বেবোস-গলশেটি, যোগাযোগ ব্যবস্থাপক শেখ অংকন ও যোগাযোগ কর্মকর্তা সাজিদ হাসান।

দিনব্যাপী এ সফরের সমন্বয় করছেন আইএসসিজি’র (ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেটর গ্রুপ)স্থানীয় পার্সন ও যোগাযোগ কর্মকর্তা সাইয়েদ মো: তাফহিম।

যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন মন্ত্রীর এ সফরের উদ্দেশ্য হলো রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের সহায়তায় চলমান আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সরেজমিনে দেখা এবং যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ মানবিক সহযোগিতার দিকনির্দেশনা নির্ধারণে বাস্তব চিত্র জানা।

একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গা সঙ্কটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান ও সহায়তা কার্যক্রমের মানোন্নয়নে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সফরের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তারা আশা করছেন।