বুটেক্সে খাবারে পোকা পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ, ক্যান্টিনে তালা

রান্নাঘরের পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। পচা সবজি ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে রান্না-বান্না করা হয়।

শেফাক মাহমুদ, বুটেক্স

Location :

Dhaka City
বুটেক্স ক্যান্টিনে তালা।
বুটেক্স ক্যান্টিনে তালা। |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ক্যান্টিনের খাবারে পোকা পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। দায়িত্বপ্রাপ্তদের জবাবদিহি দাবি ও প্রতিবাদস্বরূপ ক্যান্টিনে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে একজন শিক্ষার্থী নাস্তা করতে গিয়ে খাবারে পোকা দেখতে পান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যান্টিনে খাবারের মান দীর্ঘদিন ধরেই নিম্নমানের। খাবারে মাছি, তেলাপোকা এমনকি ছোট পোকা প্রায়ই পাওয়া যায়। এছাড়া রান্নাঘরের পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। পচা সবজি ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে রান্না-বান্না করা হয়। এর আগেও একই ধরনের অভিযোগে ক্যান্টিনে একবার তালা লাগানো হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি।

ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফারিয়া মাহনুর বলেন, ‘আজ সকাল ৮টার দিকে নাস্তা করার সময় খাবারে পোকা পাওয়া যায়। যখন ওয়েটারকে জিজ্ঞাসা করি, তিনি বলেন, একদিন তো হতেই পারে! পরে কিচেনে গিয়ে দেখি, নষ্ট আলু-গাজর দিয়ে ফ্রাইড রাইস বানানো হচ্ছে।’

ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান চৌধুরী অমি বলেন, ‘ক্যান্টিন কমিটির নিয়মিত পরিদর্শনের কথা থাকলেও সেটি করা হয় না। যদি করা হতো তাহলে উৎপাদনের তারিখ ছাড়া রুটির প্যাকেট বা পচা সবজি দেখতে পেতাম না। এমন খাবার আমি খেতে পারি না, আর আমার সহপাঠীরাও যেন না খায়, এ চিন্তা থেকেই আমরা তালা লাগিয়েছি। যেহেতু প্রশাসন চুপ করে বসে থাকে তাই কাজটা আমাদেরই করতে হলো।’

অভিযোগের বিষয়ে ক্যান্টিনের সুপারভাইজার অমিত হাসান বলেন, ‘আমরা নিয়মিতই ক্যান্টিনের খবর রাখি। পোকামাকড় রোধে জাল ও সাকশন ফ্যান ব্যবহার করছি। সবজি রান্নার আগে অনেকক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখি। তবুও এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। মান উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করছি।’

ক্যান্টিন পরিচালনা কমিটির শিক্ষার্থী সদস্য আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘বিগত দিনে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে ক্যান্টিনের খাবার ও সার্ভিসের মানোন্নয়নের চেষ্টা করা হয়েছে। ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট সময়ও দেয়া হয়েছিল উন্নতির জন্য। কিন্তু এখনো আশানুরূপ কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। তাই নতুন ক্যান্টিন সার্ভিস চালু সময়ের দাবি বলে মনে করি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন পরিচালনা কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে ক্যান্টিনের খাবার নিয়ে অভিযোগ এসেছে। আমরা কমিটি সদস্যরা শিগগিরই বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো। শিক্ষার্থীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষ তা করতে ব্যর্থ হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে।’