ইজারা প্রাপ্তির দীর্ঘ ৫ মাস ১৬ দিন পর রাজশাহীর ‘চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর’ বালুমহালটি ইজারাদার বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতে সব মামলা নিষ্পত্তি শেষে এবং পদ্মায় বন্যার পানি কমার পর এ বালুমহাল বুঝিয়ে দেয়া হয়।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান সরেজমিনে গিয়ে ইজারা গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাইফ ট্রেডার্সের কর্ণধার শাহিনুর রহমানকে বালুমহালটি বুঝিয়ে দেন।
জানা যায়, বাংলা ১৪৩২-৩৩ সালের জন্য ১৫ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যে মেসার্স সাইফ ট্রেডার্স বালুমহালটি ইজারা নিয়েছেন। কিন্তু ইজারা প্রাপ্তির পর মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং-১৪৯৪/২৫ ও ৪৭৮৭/২৫-এর আদেশে ইজারার সকল কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এবং বন্যায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এত দিন বালুমহালটি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল।
অভিযোগ রয়েছে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দলটির স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী নেতার নেতৃত্বে চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর বালুমহাল নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়ে ভোগদখল করে আসছিলেন।
ইজারা গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার শাহিনুর রহমান জানান, ‘আমার প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাইফ ট্রেডার্স চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর মৌজার বালুমহালটির জন্য সরকারের কাছে বাংলা ১৪৩২-৩৩ সালের জন্য ইজারা মূল্য পরিশোধ করলেও উচ্চ আদালতে মামলা ও বন্যায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘ ৫ মাস ১৬ দিন বালুমহালটি হতে বালু উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। সেই কারণে আমার প্রতিষ্ঠান বালুমহালটি হতে ১৪৩২-৩৩ সালের ইজারা মূল্যের অর্ধেক টাকাও অর্জিত হবে না। তাই বিপুল টাকা ক্ষতিপূরণের জন্য বালুমহালটির ইজারা গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারসহ ব্যবসায়িক অংশীদাররা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।’
চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর বালুমহালটির ব্যাবসায়িক অংশীদার রমজান আলী বলেন, ‘আমরা গত ১৮ মার্চ সিডিউল ড্রপ করেছিলাম এবং আমরা প্রথম লোয়েস্ট হয়েছিলাম। ইজারা প্রাপ্তির পর মহামান্য হাইকোর্টের ইজারার সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাস পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমাদের বালুমহলটি বুঝিয়ে দিয়েছেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পরে মামলায় পলাতক আওয়ামী দোসরদের থেকে মুক্ত হয়েছে চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর বালুমহাল।’
পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান জানান, ‘আমরা এ বালু মহালটি প্রতিবছরই ইজারাদারদের বুঝিয়ে দিই। আমরা আশা করবো, সরকারি বিধি মোতাবেক ইজারাদার সঠিকভাবে বালু উত্তোলন করবেন। শর্তপূরণ সাপেক্ষে মেসার্স সাইফ ট্রেডার্স বাংলা ১৪৩২-১৪৩৩ সাল পর্যন্ত চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর মৌজার বালুমহালটির বালু উত্তোলন করতে পারবে ।’
চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর মৌজার বালুমহালটি বুঝিয়ে দেয়ার সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।