ভাঙ্গা থানায় হামলায় নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মামলা

ফলে সোমবার তৃতীয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে ভাঙ্গা থানা, উপজেলা কমপ্লেক্স ও ভাঙ্গা হাইওয়ে থানাসহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়।

হারুন আনসারী, ফরিদপুর

Location :

Bhanga
মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন
মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন |সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় গত সোমবার দুপুরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনকে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভাঙ্গা থানার এসআই আজাদুজ্জামান ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান খোকন মিয়াকে। এ মামলায় থানায় হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন ও অর্থ শামছুল আজম বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে প্রথম এ মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

এর আগে দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে আলগী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যানকে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন এক গেজেটে ভাঙ্গা সদরপুর চরভদ্রাসন নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের অধীন ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন কেটে নগরকান্দা ও সালথা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-২ আসনের সাথে যুক্ত করে দেয়। এর প্রতিবাদে গত ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার প্রথমে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। তবে ওই দিন বিকেলে ইউএনও মিজানুর রহমানের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা তিন দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেন। সোমবারের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে এবং তিন দিন পরে মঙ্গলবার থেকে আবার আন্দোলন করবেন বলে জানান তারা। আন্দোলনকারীরা মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার (৯-১১ সেপ্টেম্বর ) পর্যন্ত টানা তিন দিন সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ পালন করেন। এরপর শুক্র ও শনিবার বাদ দিয়ে গত রোববার থেকে আবার টানা তিনদিন অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দেন।

গত রোববার তৃতীয় দফা কর্মসূচির প্রথম দিনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশাপাশি রাজবাড়ী-ভাঙ্গা ও ঢাকা খুলনা রেলপথ অবরোধ করেন তারা । এর ফলে ভাঙ্গার হামিরদী ও ভাঙ্গা জংশন ও রাজবাড়ীতে তিনটি ট্রেন আটকা পড়ে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়।

এ প্রেক্ষাপটে গত রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কঠোরতা আন্দোলন দমন করার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) আলগী এবং হামিরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে দেড় শ’জনকে অজ্ঞতানামা আসামি দেখিয়ে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করা হয় ভাঙ্গা থানায়। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিককে।

ফলে সোমবার তৃতীয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে ভাঙ্গা থানা, উপজেলা কমপ্লেক্স ও ভাঙ্গা হাইওয়ে থানাসহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, গত সোমবার ভাঙ্গা উপজেলা কমপ্লেক্সের যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।