গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানগুলোতে রাতের আঁধারে কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক দিনে অন্তত ৩০টিরও বেশি কঙ্কাল চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কঙ্কাল চুরি ঠেকাতে গ্রামবাসী রাত জেগে কবরস্থানে পাহারা দিচ্ছেন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, কচুয়া ইউনিয়নের কচুয়া, সরদারপাড়া, আগড়াপাড়া, পূর্ব কচুয়া, পাঠানপাড়া ও তালপট্টি গ্রামের বেশ কয়েকটি পারিবারিক কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে এই এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ার সুযোগে রাতের আঁধারে বিভিন্ন কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরি করছে দুর্বৃত্তরা।
সরদারপাড়া গ্রামের ছদরুল ইসলাম জানান, আমার মা নুরজাহান সম্প্রতি মারা যান। আমি এখনও মায়ের শোক কাটিয়ে উঠতে পারিনি। সকালে এসে দেখি মায়ের কবর খোঁড়া, কাফনের কাপড় আছে কিন্তু কঙ্কাল নেই। আমি আবার মাটি দিয়ে কবর ঢেকে রাখি। এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
মানিকগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় মসজিদের সর্দার রেজওয়ানুল হক জানান, আমার গ্রাম-সম্পর্কিত চাচা জহুরুল ইসলামকে কয়েক মাস আগে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল। আজ এসে দেখি কবর খোঁড়া, কাফনের কাপড় আছে কিন্তু কঙ্কাল নেই। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক।
অন্যদিকে কচুয়া ইউনিয়নের শামিম মিয়া জানান, আজ সকালে এলাকায় কঙ্কাল হারানোর খবর ছড়িয়ে পড়ে। আমি গিয়ে দেখি আমাদের পারিবারিক কবরস্থান থেকেও তিনটি কঙ্কাল চুরি হয়েছে।
সাঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আজহার আলী বলেন, ‘প্রতিদিন কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হচ্ছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র হয়তো এগুলো বিদেশে পাচার করছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।’
কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খন্দকার বলেন, ‘প্রতিদিন কবর চুরির ঘটনায় ফোন আসছে। স্থানীয়রা এখন রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান হবে না।’
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, কঙ্কাল চুরির বিষয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ফোন পাচ্ছি। তবে এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।