পিরোজপুরে মাছের ভরা মৌসুমেও মাছ পাওয়া যাচ্ছে না

‘বর্ষাকালে কিছু দেশীয় ছোট বড়ো মাছ পাওয়া যায়। বর্ষার শেষ হলে দেশীয় মাছ আর তেমন পাওয়া যায় না। সারা বছরই দেশী মাছের দাম বেশি থাকে। বাজারের চাহিদার চেয়ে দেশী মাছের সরবরাহ কম থাকে।’

কাউখালী (পিরোজপুর) সংবাদদাতা

Location :

Kaukhali
দেশী প্রজাতির বিভিন্ন মাছ
দেশী প্রজাতির বিভিন্ন মাছ |নয়া দিগন্ত

পিরোজপুরে কাউখালীতে মাছের ভরা মৌসুমেও দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্কট বাড়ছে দিন দিন। মাছে ভাতে বাঙালি এই শব্দটি যেন হারিয়ে যাচ্ছে। আগে গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার অন্যতম আকর্ষণ ছিল দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের মাছ।

সেই দেশীয় প্রজাতির ছোট বড়ো মাছ এখন সোনার হরিণের মতো হয়ে গেছে। এখন অনেকেরই দেশী প্রজাতির মাছের নাম জানে না। বিশেষ করে এই প্রজন্মের শিশু কিশোররা। দেশীয় প্রজাতির মাছের নাম শুধু বইয়ে পড়ছে। বাস্তবে এগুলোর দেখা পায় না তারা, দেখলেও হয়তো চিনবে না। কোন মাছের কি নাম তা অনেকেই এখন ঠিকঠাক বলতে পারবে না।

এক সময় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ রাতবিরেতে মাছ শিকার করত। দেশী মাছের মধ্যে ইলিশ, রুই, কাতলা, সোমা, তপস্বী, কোরাল, মৃগেল, বোয়াল, চিতল, মাগুর, পাঙ্গাস, শোল, গজার।

আর ছোট মাছের মধ্যে পুটি, টাকি, চিংড়ি, সর্পুটি, মলা ঢেলা, পাবদা, বাইলা, কৈ মাছ, খলিশা, টেংরা, শিং মাছ, কাচকিসহ অন্তত ৫০ প্রজাতির মাছ আমাদের চাহিদা মিটিয়ে এ অঞ্চলের দেশীয় মাছগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাত জেলেরা।

দেশীয় মাছের বিলুপ্তির জন্য দায়ী করা হচ্ছে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, অবৈধ জালের অবাধ ব্যবহার, ও পোনা মাছ ধ্বংস, মৎস্য খামারের কাছে জমিতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কীটনাশক ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার, জলাশয় ভরাট, নদ-নদীর নাব্যতা হ্রাস, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, বন্যা, জলাবদ্ধতা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ বিভিন্ন কারণে দেশীয় মাছের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

মাছ ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী বলেন, ‘বর্ষাকালে কিছু দেশীয় ছোট বড়ো মাছ পাওয়া যায়। বর্ষার শেষ হলে দেশীয় মাছ আর তেমন পাওয়া যায় না। সারা বছরই দেশী মাছের দাম বেশি থাকে। বাজারের চাহিদার চেয়ে দেশী মাছের সরবরাহ কম থাকে বিধায় দাম থাকেও অত্যধিক।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, পুকুর, খালবিল ভরাটের কারণে দেশী মাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাছাড়া কিছু অসাধু মৎস্যজীবীরা প্রশাসনকে এড়িয়ে ছোট মাছ শিকার করছে। এজন্য নজরদারি বাড়াতে হবে, নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের কারখানাগুলো বন্ধ করতে হবে।