কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার আবাসনগামী খালের ওপর দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নির্মিত ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের মাত্র তিন মাসের মাথায় ভেঙে পড়ে। সে ঘটনার ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও সেখানে নতুন কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। ফলে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ড্রামের ভেলায় পারাপার করছেন দুই গ্রামের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার বড় ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরাম আবাসনগামী খালটি দুই গ্রামের মানুষকে সংযুক্ত করে রেখেছিল ওই সেতুর মাধ্যমে। ২০১৯ সালে সেতুটি নির্মিত হওয়ার পর এলাকাবাসীর স্বস্তি ফেরে। কিন্তু মাত্র তিন মাসের মাথায় ভারী বর্ষণ ও খালের স্রোতে সেতুটি ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে তা আর মেরামত বা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি।
এতে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রতিদিনই তাদের বাধ্য হয়ে অস্থায়ী ড্রামের ভেলা ব্যবহার করে খাল পার হতে হয়। সামান্য অসাবধানতা বা ভারসাম্য হারালে ঘটে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা সামাদ আলী ও নজির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সেতুটি নির্মাণের তিন মাস পরই ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে ছয় বছর কেটে গেলেও নতুন করে কেউ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। প্রতিদিন ড্রামের ভেলায় জীবন বাজি রেখে খাল পার হতে হয়। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনাও ঘটে, কিন্তু প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের কেউই খবর নেয় না।
অন্যদিকে, এলাকার স্কুলছাত্রী তানহা আক্তার ও মিম আক্তার জানায়, প্রতিদিন ড্রামের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। অনেক সময় ভারসাম্য হারিয়ে পানিতে পড়ে বইপত্র নষ্ট হয়ে যায়। তবুও না গেলে ক্লাস মিস হয়। ভয় নিয়েই যেতে হয় প্রতিদিন।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সিরাজউদ্দৌলা বলেন, ‘ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু খালের প্রস্থ ও গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেতুটি টিকেনি। বর্তমানে খালটি আরো প্রশস্ত হওয়ায় পুরোনো নকশায় নতুন করে সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘নতুনভাবে প্রকল্প প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনার চেষ্টা করা হবে।’
স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এ অঞ্চলের মানুষ চরম বিপাকে পড়বে। বর্ষা এলেই ভেলা ডুবে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে নতুন নকশায় টেকসই ও স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা সময়ের দাবি।



