সাজসজ্জা আর আনন্দে সিলেট কারাবন্দীদের ব্যতিক্রমী ঈদ উদযাপন

‘সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারে স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ উপভোগ করেছে বন্দীরা। ঈদের দিন কর্মকর্তারা একে অপরের সাথে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।’

আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
সাজসজ্জা আর আনন্দে সিলেট কারাবন্দীদের ব্যতিক্রমী ঈদ উদযাপন
সাজসজ্জা আর আনন্দে সিলেট কারাবন্দীদের ব্যতিক্রমী ঈদ উদযাপন |নয়া দিগন্ত

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্যতিক্রমী ঈদ আনন্দ উপভোগ করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারের বন্দীরা। সাজসজ্জা পরিবেশ, একসাথে ঈদের জামাত আদায়, কারাগার কর্তৃপক্ষের সাথে কুশল বিনিময়সহ টানা তিন দিন প্রিয় মানুষদের সাথে বেশি সময় সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছেন বন্দীরা। এছাড়া পরিবার-প্রিয়জনের রান্না করে আনা খাবার ঢেকুর তুলে খেয়েছেন বন্দীরা। সবমিলিয়ে যেন খুশির শেষ নেই তাদের।

কর্তৃপক্ষের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে আনন্দ প্রকাশের সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেখা গেছে কারাবন্দীসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের। ঈদের দিন থেকে রোববার (১০ জুন) পর্যন্ত টানা তিন দিন এমন দৃশ্য দেখা যায় সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারে।

জানা যায়, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পাঁচ শতাধিক বন্দীদের উপস্থিতিতে কারা কর্তৃপক্ষকে সাথে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের জামাত। ঈদ উপলক্ষে কারাগারের ভেতরে সাজিয়ে তুলা হয় সবকিছু। একইসাথে বন্দীদের জন্য পছন্দের গরু, খাসিসহ বাহারি খাবারের আয়োজন করা হয়।

কারাবন্দী শাহিন আহমদ নয়া দিগন্তকে বলেন, কারাগারে ঈদের দিনের খাবার খেয়ে আমরা যতটা খুশি তার চেয়ে বেশি খুশি কারা কর্তৃপক্ষের আচরণে। এছাড়া একসাথে ঈদের জামাত আদায় করতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে।

তবে তিন দিন পর বিদায় বেলায় কারাগার প্রাঙ্গণে দেখা মেলে করুণ দৃশ্য। কারাবন্দী ও পরিবার-পরিজনদের চোখের জলে যেন বৃষ্টি নামে পুরো কারাগারে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারের ডিআইজি প্রিজন মো: ছগির মিয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘বন্দীদের সাথে একই কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের জামাত আদায় করা হয়েছে। স্বজন-প্রিয়জনদের মতো আন্তরিকতার সাথে কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় হয়েছে। এছাড়া শারীরিক সুস্থতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হয় তাদের। মূলত ঈদের আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তাদের।’

সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, ‘কারাগার সম্পর্কে মানুষের ধারণা পরিবর্তন করতে সরকারের নির্দেশনায় আইজি প্রিজন ও ডিআইজি প্রিজন স্যারদের নির্দেশক্রমে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

কারা উপ-মহাপরিদর্শক ছগির মিয়া জানান, ‘সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারে স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ উপভোগ করেছে বন্দীরা। ঈদের দিন কর্মকর্তারা একে অপরের সাথে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।’

তিনি আরো জানান, ‘কারাগারে নতুন কোনো ভবন নেই। কিন্তু ভবন পুরাতন হলেও কারা কর্তৃপক্ষ সংস্কারের মাধ্যমে তা খুব সুন্দরভাবে সাজগোজ করে রেখেছেন। তবে নতুন ভবন নির্মাণ জরুরি। সব মিলিয়ে আগের দুর্ভোগ বা কষ্ট এখন আর নেই বন্দীদের মধ্যে। এছাড়া বন্দীদের কষ্ট লাঘবে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে কারাগারে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে।’