গাজীপুরে ১৮ ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক দু’টি ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটেছে। এসময় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন শতাধিক যাত্রী। এরমধ্যে শুক্রবার দুপুরে রেললাইনের লোহারপাত ভেঙে জয়দেবপুর জংশনে প্রবেশের সময় মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগির চাকা লাইনচ্যুত হয়ে একটি দুর্ঘটনা ঘটে।
অপর ঘটনাটি ঘটে কালীগঞ্জ উপজেলার আড়িখোলা রেলস্টেশন এলাকায় কিশোরগঞ্জগামী এগার সিন্ধুর গোধূলি ট্রেনের হুইস পাইপ খুলে যাওয়ায়। ওই ট্রেন দু’টি যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
জয়দেবপুর জংশনের স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান ও যাত্রীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে মোহনগঞ্জ যাচ্ছিল। পথে দুপুর দুইটা ১০ মিনিটের দিকে ট্রেনটি আউটার সিগনাল ও পয়েন্ট অতিক্রম করে গাজীপুরের জয়দেবপুর জংশন স্টেশনে প্রবেশের মুহূর্তে রেললাইনের লোহার পাত ভেঙ্গে গিয়ে ট্রেনটির পাওয়ারকারের বগি লাইনচ্যুত হয়। চালক দক্ষতার সাথে দ্রুত ট্রেনটি থামাতে সক্ষম হন। এতে অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ওই ট্রেন ও যাত্রীরা।
জয়দেবপুর জংশন স্টেশনের সিনিয়র মাস্টার মো: শাহজাহান জানান, ওই ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হলেও ডুয়েল লাইনের কারণে ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহগামী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধারে কাজ করছেন রেলওয়ের উদ্ধার কর্মীরা।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রেনের পাওয়ারকার বগির চাকায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে তদন্তের পর দুর্ঘটনা প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে এগার সিন্ধুর গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেন কিশোরগঞ্জ যাচ্ছিল। রাত পৌনে ৮টার দিকে ট্রেনটি টঙ্গী-ভৈরব রেললাইন দিয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়িখোলা রেলস্টেশন অতিক্রম করার সময় ট্রেনের একটি বগির হুইস পাইপ খুলে যায়। এতে গতি কমে গিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর ট্রেনটি থেমে যায়।
এ ঘটনায় ওই রুটে ভৈরবগামী লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে ঢাকাগামী লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। পরে ট্রেনের পরিচালক, লোকোমোটিভ মাস্টার (চালক) এবং যাত্রীরা তল্লাশি চালিয়ে ট্রেনের ‘ক’ বগির হুইস পাইপ খোলা দেখতে পান, যার মাধ্যমে ট্রেনের কমপ্রেসড এয়ার প্রবাহিত হয়। এই পাইপ খুলে যাওয়ায় ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং রাত সাড়ে ৯টার দিকে ট্রেনটি পেছনের দিকে চালিয়ে আড়িখোলা স্টেশনে নিয়ে আসেন। পরে ক্ষতিগ্রস্ত বগিটি আড়িখোলা স্টেশনে রেখে অন্যবগিগুলো নিয়ে রাত ১০টা ১৮ মিনিটে ট্রেনটি যাত্রীসহ কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দুর্ঘটনার প্রায় দেড়ঘণ্টা পর ওই লাইনে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘এটি একটি যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।’



