অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সম্প্রতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই : দেলাওয়ার হোসেন

‘সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু নয়, আমরা সবাই বাংলাদেশী। আগামী দিনে এই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছু থাকবে না। সবাই আমরা বাংলাদেশের নাগরিক, সবাই সমান অধিকার পাব। আমরা সবাই বাংলাদেশী হিসেবে এই রাষ্ট্র থেকে সমান অধিকার ভোগ করব ইনশাআল্লাহ।’

রাফিক সরকার, ঠাকুরগাঁও

Location :

Thakurgaon
হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন দেলাওয়ার হোসেন
হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন দেলাওয়ার হোসেন |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন, ‘ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি বিভেদ না করে বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে আমরা একে অপরের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা প্রদর্শন করে আসছি। পারস্পরিক এই সম্পর্ক আরো মজবুত করে শুধু দেশে নয়, বিশ্ব দরবারেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এদেশে জনসংখ্যার অধিকাংশ মুসলিম হলেও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল ধর্মের মানুষ এখানে মিলেমিশে শান্তিতে বসবাস করছে।’

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

দেলাওয়ার হোসেন বলেন, ‘সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু নয়, আমরা সবাই বাংলাদেশী। আগামী দিনে এই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছু থাকবে না। সবাই আমরা বাংলাদেশের নাগরিক, সবাই সমান অধিকার পাব। আমরা সবাই বাংলাদেশী হিসেবে এই রাষ্ট্র থেকে সমান অধিকার ভোগ করব ইনশাআল্লাহ।’

তিনি বলেন, ‘ইসলাম কখনোই অন্য কোনো ধর্মের ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেয় না। জামায়াতের দ্বারা কখনো কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা বা নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটবে না। জামায়াত সবসময়ই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার পাশে থেকেছে, ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অবহেলিত এলাকার মানুষ। দীর্ঘ সময় ধরে লক্ষ্য করেছি আমাদের পরিচয় দেয়ার মতো এখানে কাঙ্ক্ষিত কোনো ডেভলপমেন্ট এখানে হয়ে ওঠেনি। আগামী নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ঠাকুরগাঁওয়ে একটি আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। যেন এই এলাকার গরীব মানুষকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করে রংপুর বা ঢাকায় যেতে না হয়।’

দেলাওয়ার হোসেন বলেন, ‘এলাকার বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনীতির চাকা সচল করতে অবিলম্বে ইপিজেড চালু করা হবে।’

এছাড়া উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিমানবন্দর পুনরায় চালু করা এবং শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার মাধ্যমে হাজার হাজার বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার পরিকল্পনার কথাও জানান জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন।

মুসলমানদের মসজিদ যেমন পাহারা দিতে হয় না, তেমন হিন্দুদের মন্দিরও যেন পাহারা দিতে না হয়, এমন একটি ধর্মীয় সম্প্রতির সমাজ কায়েমের আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই একই পাড়া, মহল্লার মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজন বসবাস করবে, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো প্রতিহিংসা থাকবে না। আমরা সম্প্রীতি, ভালোবাসা ও সৌহার্দ্যের রাজনীতি এই ঠাকুরগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলে নির্বাচিত সনাতন ধর্মের প্রতিনিধি সুজনচন্দ্র, জামায়াতের ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার আমির অধ্যাপক বেলালউদ্দিন প্রধান, জেলা সেক্রেটারি ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন আহাম্মদ।

মতবিনিময় সভায় জামায়াতের হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাকর্মীসহ বিপুল সংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন উপস্থিত ছিলেন।