জামালপুরের বকশীগঞ্জে উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও ফসলি জমি। বৃদ্ধি পেয়েছে দশআনী নদীর পানি। প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভেঙে পড়ছে নদীর পাড়। প্রতি বছর নদীভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত পরিবার। ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় দিশাহারা নদী পাড়ের মানুষ।
জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টিতে উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের পাঁচটি ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙনের কারণে আতঙ্কে রয়েছে এসব গ্রামের মানুষ। নদী ভাঙনে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের ঘুঘরাকান্দি, আইরমারী, মন্দীপাড়া, উজান কলকিহারা, কলকিহারা ও খাপড়া পাড়া গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। এছাড়া নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চর আইরমারী, বাংগালপাড়া ও বালু গ্রামের ফসলি জমি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।
মেরুরচর ইউনিয়নের ঘুঘরাকান্দি বাজার, একটি মসজিদ ও একটি গ্রামীণ রাস্তা ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে মন্দী পাড়া সেতু, বাজারসহ শত শত বাড়িঘর ও ফসলি জমি। প্রতি বছর বন্যা এলেই শুরু হয় নদী ভাঙা মানুষের কষ্টের দিন। নদী ভাঙনের ফলে বসত-ভিটা, ফসলি জমি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে এসব এলাকার মানুষরা।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, নদী ভাঙন রোধে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ প্রতি বছর নিঃস্ব হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, মেরুরচর ইউনিয়নের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে অপরিকল্পিত ড্রেজিং কারণে নদী দশআনী নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা না নিলে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে আটটি গ্রামের অর্ধ লাখেরও বেশি মানুষ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সুমন জানান, ভাঙনকবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুদ রানা জানান, মেরুরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে তা আমরা অবগত হয়েছি। দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি।