দাগনভূঞা পোস্ট অফিসে নারী উদ্যোক্তাকে হয়রানির অভিযোগ

ফেনীর দাগনভূঞায় নোয়াখালী পোস্টাল ডিভিশনের অধিনে দাগনভূঞা স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট অব পোস্ট অফিসে নারী উদ্যোক্তাকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

দাগনভূঞা (ফেনী) সংবাদদাতা

Location :

Feni
দাগনভূঞা পোস্ট অফিসে নারী উদ্যোক্তাকে হয়রানির অভিযোগ
দাগনভূঞা পোস্ট অফিসে নারী উদ্যোক্তাকে হয়রানির অভিযোগ |নয়া দিগন্ত

ফেনীর দাগনভূঞায় নোয়াখালী পোস্টাল ডিভিশনের অধিনে দাগনভূঞা স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট অব পোস্ট অফিসে নারী উদ্যোক্তাকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবুল হোসেন ওই অফিসের নারী উদ্যোক্তার কক্ষটি সিলগালা করে দেন বলে জানা যায়।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ‘স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট’ এর উদ্যোক্তাদের মূল কাজ হলো ডাক বিভাগের সেবাগুলোকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া। এটি মূলত ডাকঘরকে ডিজিটাল সেবা কেন্দ্রে রূপান্তর করার একটি উদ্যোগ।

উদ্যোক্তার অন্যতম প্রধান কাজ হলো ডাক বিভাগের প্রচলিত সেবাগুলো ডিজিটালি প্রদান করা। এর মধ্যে রয়েছে ​ই-পার্সেল বুকিং ও ট্র্যাকিং, দ্রুত এবং নিরাপদভাবে চিঠি বা নথি পাঠানোর ব্যবস্থা করা। গ্রাহকদের ডাক জীবন বীমার প্রিমিয়াম জমা নেয়া এবং নতুন পলিসি খুলতে সাহায্য করা। ‘নগদ’ বা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠানো বা উত্তোলনে সহায়তা করা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি এবং ইন্টারনেটের বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা বা প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা সুবিধাভোগীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া। ই-কমার্স পণ্য রিসিভ করা এবং গ্রাহকের কাছে ডেলিভারি দেওয়া, স্থানীয় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পণ্য ডাক বিভাগের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন, বা চাকরির আবেদনের ফরম পূরণ করা, সাধারণ দাফতরিক কাজের জন্য স্ক্যানিং, প্রিন্টিং বা ফটোকপির সুবিধা রাখা, গ্রাহকদের বিভিন্ন সরকারি সেবা সম্পর্কে তথ্য দেয়া এবং পোস্টাল সেবার নিয়মাবলী বা ট্র্যাকিং সম্পর্কে গ্রাহকদের সচেতন করা। এ লক্ষ্যে গত ২৯ মে ২০২৪ সালে নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষীপুর জেলার ২০ টি ডাকঘরে একজন পুরুষ ও একজন নারী উদ্যোক্তা নিয়োগ দেয়া হয়। যার মধ্যে দাগনভূঞা পোস্ট অফিসে নিয়োগ পান আল ইমরান ও একরামুর নেছা তামান্না। এর মধ্যে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত একরামুর নেছা তামান্না সকল বিধি বিধান মেনে ২০২৪ সালের ৩০ মে তারিখে যোগদান করেন। নিয়মিত অফিস করার মধ্যে ২ নভেম্বর তার ব্যবহৃত কক্ষটি সীলগালা করে দেন দাগনভুঞা উপজেলা পোস্ট অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক আবুল হাসেম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারী উদ্যাক্তা একরামুর নেছা তামান্না জানান, কোন কারণ ছাড়াই স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্টটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন রকমের হুমকি পাচ্ছি এবং ঝামেলায় জড়ানোর ভয় দেখানো হচ্ছে আমাকে।

এ নারী উদ্যোক্তা দুঃখ করে বলেন- যেখানে সরকার দেশের বেকার শিক্ষিত জনগোষ্ঠিকে প্রশিক্ষিত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে একজন কর্মকর্তার ব্যক্তি হিংসার শিকার হয়ে শত শত বেকারকে প্রশিক্ষিত করা একটি প্রতিষ্ঠান সীলগালা করা হলো। কক্ষের মধ্যে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল রয়েছে, যা নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। রুটি রুজির একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে আমি মানবেতর জীবনযাপন করতেছি। এ বিষয়ে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা মহোদয়ের সুদৃষ্ঠি কামনা করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দাগনভূঞা পোস্ট অফিসের ভারপ্রাপ্ত পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবুল হাসেম জানান, ওই নারী উদ্যোক্তা সাময়িক নিয়োগ প্রাপ্ত। সে আমাদের পূর্ণ নিয়োগপ্রাপ্ত নয়। তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।