কুড়িগ্রামে চার পা বিশিষ্ট বিরল বক দেখতে মানুষের ভিড়

আমরা গ্রামে অনেক বক পাখি দেখেছি। সবারই দু'টি পা থাকে। কিন্তু এই বকটির চারটি পা দেখে আমরা সবাই অবাক হয়েছি।

জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)

Location :

Kurigram

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালাটারী গ্রামে দেখা মিলেছে এক বিরল প্রজাতির বকপাখির, যার রয়েছে চারটি পা। প্রকৃতিতে এমন দৃশ্য অত্যন্ত দুর্লভ। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। প্রতিদিন শত শত মানুষ ছুটে আসছেন শুধুমাত্র এক নজর দেখার জন্য।

স্থানীয় হাঁড়ি-পাতিল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ প্রথম পাখিটিকে দেখতে পান। তিনি জানান, ‘কয়েকদিন আগে পুকুরপাড়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকা পাখিটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। নিয়মিত চিকিৎসা ও যত্নের মাধ্যমে পাখিটি এখন সুস্থ।’

আব্দুর রশিদ বলেন, ‘পাখিটির জন্য প্রতিদিন মাছ সংগ্রহ করে খাওয়াচ্ছি। সেবা-যত্ন করায় এখন বেশ সুস্থ আছে। পাখির প্রতি আমার ভালোবাসাই আমাকে এভাবে যত্ন নিতে অনুপ্রাণিত করছে।’

চার পা বিশিষ্ট বক দেখার খবর ছড়িয়ে পড়ায় আব্দুর রশিদের বাড়িতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত উৎসুক মানুষ। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে ঘটনাটি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। শিশু-কিশোরদের মাঝেও দেখা গেছে ব্যাপক উৎসাহ।

স্থানীয় শিশু জিহাদ বলেন, ‘আমরা গ্রামে অনেক বক পাখি দেখেছি। সবারই দু'টি পা থাকে। কিন্তু এই বকটির চারটি পা দেখে আমরা সবাই অবাক হয়েছি।’

একই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এমন দৃশ্য আমি জীবনে প্রথম দেখলাম। চার পা বিশিষ্ট বক সত্যিই বিরল ঘটনা। প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছে শুধু এক নজর দেখার জন্য। বিষয়টি এখন শুধু স্থানীয় নয়, জাতীয়ভাবেও আলোচনার দাবি রাখে। আমি মনে করি, এ ধরনের বিরল প্রাণীকে সুরক্ষায় রাখতে কর্তৃপক্ষের এগিয়ে আসা জরুরি।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, জেনেটিক বৈচিত্র্যের কারণে এ ধরনের অতিরিক্ত অঙ্গের সৃষ্টি হলেও তা টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন। তবে আব্দুর রশিদের যত্নে পাখিটি এখনো সুস্থ রয়েছে। ঘটনাটিকে ঘিরে জনতার ভিড় স্থানীয় এলাকায় একপ্রকার মেলায় রূপ নিয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনক বলেন, ‘এটি জন্মগত ত্রুটি। জেনেটিক্সজনিত কারণে পাখিটির শরীরে অতিরিক্ত অঙ্গ তৈরি হয়েছে। প্রকৃতিতে এ ধরনের ঘটনা খুবই বিরল হলেও অস্বাভাবিক নয়। তবে চার পা বিশিষ্ট বক মানুষের কাছে নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর একটি দৃশ্য।’