নতুন বছরের প্রথম দিনই বই পাবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা : শিক্ষা উপদেষ্টা

‘যে দেশগুলো শিক্ষায় ভালো করছে, সেখানে প্রাথমিকের শিক্ষক হওয়ার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানের প্রয়োজন হয়, লাইসেন্স নিতে হয়।’

মো: সাজ্জাতুল ইসলাম, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার
ময়মনসিংহে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার |নয়া দিগন্ত

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, ‘সব বই আমরা হাতে পেয়েছি, প্রত্যেক জেলাতেই পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হবে।’

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে ময়মনসিংহের ‎জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) হলরুমে আয়োজিত উপজেলা পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর ও নেপের সহকারী বিশেষজ্ঞদের ২০২৫ সালের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘যে দেশগুলো শিক্ষায় ভালো করছে, সেখানে প্রাথমিকের শিক্ষক হওয়ার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানের প্রয়োজন হয়, লাইসেন্স নিতে হয়। চিকিৎসকেরা যেমন এমবিবিএস সম্পন্ন করার পর বিএমডিসি থেকে লাইসেন্স নেন, তা নাহলে প্র্যাকটিস করতে পারেন না। শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও অনেক দেশে এ নিয়ম চালু আছে। আমাদের দেশে সেটি ভবিষ্যতে চালুর পরিকল্পনা করছি।’

প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন ও ১১তম গ্রেড নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বিষয়ে বেতন কমিশন আছে, তারা বিষয়টি নির্ধারণ করবে। সিদ্ধান্তের সাথে জড়িত সবার সাথে কথা বলেছি, যেন এটি কার্যকর করা হয়। আশা করতে পারি, এটি বাস্তবায়ন হবে। তবে শিক্ষকদের পরীক্ষা রেখে আন্দোলন করাটা যুক্তিযুক্ত হয়নি। আমরা তাদের দাবিকে অযৌক্তিক বলছি না। আমরা বলছিলাম, কার্যকর করার জন্য চেষ্টা করছি।’

নেপ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) প্রোগ্রামটি চালু হতে হচ্ছে। দেশের ১২টি প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) প্রোগ্রামটি পাইলটিং ভিত্তিতে চালু হবে। পিটিআইগুলো হলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, যশোর, কুমিল্লা, জয়দেবপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া। এ প্রোগ্রামটির মেয়াদ হবে ১০ মাস। প্রোগ্রামটি অনাবাসিক ও বৈকালিক।

ডিপিএড প্রোগ্রামের বিষয়ে বিধান রঞ্জন রায় বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যারা শিক্ষায় আগ্রহী ও শিক্ষক হতে চান, তারা ডিপিএড কোর্স করবেন। এতে তারা পেশাগত ক্ষেত্রে ভালো করবেন এবং আমরা কিছু কমিটেড মানুষ পাব। এতে শিক্ষকতার ক্ষেত্রে তারা ভালো করবেন এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।’

বাংলাদেশের যেকোনো স্থায়ী নাগরিক এই প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন। কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএসহ (৪ স্কেলে ন্যূনতম ২.২৫ ও ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২.৮০) স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ/সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য নয়। নির্ধারিত ফি পরিশোধ সাপেক্ষে আগ্রহী প্রার্থীরা কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। উক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন যেকোনো বয়সের ব্যক্তি যথাযথ প্রক্রিয়ায় এই প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীকে নেপের ডিপিএড বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নেপের মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ফারাহ শাম্মী।