মাগুরার শ্রীপুরের বিলসোনাই গ্রামের নাজির সরকার, সত্তার মণ্ডল ও কাছেদ কাজী নামের তিন ব্যক্তির দ্বন্ধে ১৫টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে সত্তার মণ্ডল যাতায়াতের শত বছরের পুরানো চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। শুধু তাই নয় রাস্তাটি মাঠের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় যেতে পারছেন না কৃষকেরা মাঠে, আনতে পারছেন না তাদের ফসল।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই রাস্তার দু’ধারে শত বছর ধরে অন্তত ১৫টি পরিবার বসবাস করে আসছে। সে সময় থেকেই ওই পরিবারগুলোর চলাচলের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই রাস্তাটি। কাছেদ কাজীর রোপনকৃত একটি বরইগাছ রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় আশেপাশের প্রতিবেশীরা গাছটি কাটতে অনুরোধ করেন। শত অনুরোধের পরেও গাছটি সেখানেই রয়ে গেছে। তাছাড়া হঠাৎ রাস্তার পাশে নাজির সরকার একটি ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করলে পাশের জমির মালিক সত্তার মণ্ডল রাস্তার জায়গা না রেখেই পুরো জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়ে পুরো রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ওহাব কাজী, মান্নান কাজী, হাফিজার, নুরুল হোসেন, জিয়াউর, মুক্তার সর্দারসহ অন্তত ১৫টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
জরুরি প্রয়োজনে আশ-পাশের ঝোপ ঝাড়ের ভেতর দিয়ে কোনো রকমে চলাফেরা করছে। এছাড়াও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের বেড়ার মধ্য দিয়েই অনেকের চলাচল করতে দেখা গেছে। বাইসাইকেল থেকে শুরু করে সকল প্রকার যানবাহন অন্যের বাড়ি ও রাস্তার ওপর রেখেই তাদের যেতে হচ্ছে নিজ বাড়িতে। শুধু তাই নয় চালচলের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাঠের কাজ করতে যাওয়া বিলসোনাই গ্রামসহ আশেপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ চরম ভোগন্তিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সদস্যরা জানান, শত বছর ধরে আমাদের বাপ-দাদারা এ রাস্তা ব্যবহার করে আসছে। আমরাও এ রাস্তায় চলাচল করছি। কিন্তু নাজির সরকার রাস্তার জায়গা না রেখে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করলে পাশের জমির মালিক সত্তার মণ্ডল পুরো রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তাছাড়া কাছেদ কাজীকে রাস্তার ওপর থেকে বরইগাছ কাটতে বললেও তিনি কাটছেন না। আমরা ১৫টি পরিবার পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।
এ বিষয়ে কাছেদ কাজী বলেন, ‘রাস্তার কাজ হলে আমি গাছ কাটতে চেয়েছি। রাস্তার কাজ শুরু হলে আমি গাছ কেটে দেব।’
নাজির সরকার বলেন, ‘আমি রাস্তার জায়গা ছেড়ে ঘরের কাজ শুরু করেছিলাম, আমি রাস্তার জায়গা ছাড়লেও পাশের জমির মালিক সত্তার মণ্ডল পুরো রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।’
সত্তার মণ্ডলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ওই জায়গার ওপর দিয়ে ওই পরিবারগুলো চলাচল করে আসছে। আমি কোনো কিছু বলি না। তবে নাজির সরকার রাস্তার কোনো জায়গা না রেখেই ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তাই বাধ্য হয়ে আমি আমার পুরো জায়গা ঘিরে দিয়েছি। আমার পাশের জমির মালিক যদি রাস্তার জায়গা ছেড়ে দেয়, আমিও ছেড়ে দেব।’
এই ভোগন্তি থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য এলাকাবাসী উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।