আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি দাশ এখন এপিপি!

পৌর আওয়ামী লীগের ১০নম্বর ওয়ার্ডের আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন কিনা? এমন প্রশ্ন করা হলে, বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।

ঈদগাঁও (কক্সবাজার) সংবাদদাতা

Location :

Eidgaon
আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি দাশ এখন এপিপি
আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি দাশ এখন এপিপি |নয়া দিগন্ত

কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের ১০নম্বর ওয়ার্ডের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট উজ্জ্বল কান্তি দাশ (৩৫) কে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল কক্সবাজার-৩) নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাতে বিএনপি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাসহ জনমনে বিস্ময় তৈরি হয়েছে। এমনকি এতে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপক দাশের হাত ধরে আওয়ামী রাজনীতিতে প্রবেশ করেন উজ্জল কান্তি দাশ। পরে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি। জুলাই বিপ্লবের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে শহরের প্রধান সড়কস্থ ব্রাহ্ম মন্দিরে অস্ত্রমজুদ ও ছাত্র জনতার ওপর সরাসরি গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে দীপক দাশের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যার দায়ে রুজু হওয়া মামলার আসামিও দীপক দাশের বিরুদ্ধে উগ্রপন্হী ইস্কন সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও রয়েছে। তারই অনুসারী ১০নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি দাশ।

একাধিক মামলার আসামী হয়ে বর্তমানে পলাতক আছেন কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপক দাশ। তার অনুসারী উজ্জ্বল সহকারী পিপি’র মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর পদে নিয়োগ পাওয়ায় স্যোশাল মিডিয়ায়ও সৃষ্টি হয়েছে সমালোচনার ঝড়।

এই বিষয়ে কক্সবাজার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জুনায়েদ হোসেন বলেন, ‘অ্যাডভোকেট উজ্জ্বল কান্তি দাশ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হয়ে কাজ করার পরও কিভাবে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হোন সেটা অত্যন্ত অবাক করা বিষয়। স্বৈরাচারের দোসর এবং তাদের যারা বৈধ করছে তাদের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান কঠোর। অনতিবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচির ডাক দিবো। আর এই সিদ্ধান্তের পেছনে কাদের হাত আছে তা খোঁজ নিয়ে তাদেরও দোসরের সহকারী হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অভিযোগ রয়েছে উজ্জ্বল কান্তি কক্সবাজার পৌরসভা প্রধান সড়ক সংলগ্ন বিভাগীয় বনকর্মকর্তার অফিসের পাশে যে ঘরে বসবাস করেন সেটিও একটি সরকারি জমি।

অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট উজ্জ্বল কান্তি দাশ গণমাধ্যমকে জানান, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন পদ পদবী ব্যবহার করে জায়গা দখল করেছিল আওয়ামী লীগ নেতা রনজিত দাশ। তার মধ্যে আমারও একটি জায়গা তিনি দখল করেন। সেই জায়গার মালিকরা বর্তমানে কোর্টে এসে মামলা করছে। তিনি মনে করছেন আমিই সেই মামলা গুলো করাচ্ছি। যদিও ওকালত নামায় আমার কোনো সই স্বাক্ষরও নেই। তারই প্রেক্ষিতে হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে রনজিত দাশ ও তার ভাই বেন্টু দাশ।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার যোগ্যতাবলে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর পদটি পেয়েছি, এই বিষয়টি সহ্য করতে পারছেন না তারা। তাদেরই নির্দেশে আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নামে-বেনামের আইডি দিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে কিছু কুচক্রী মহল।’

আপনি পৌর আওয়ামী লীগের ১০নম্বর ওয়ার্ডের আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন কিনা? এমন প্রশ্ন করা হলে, বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।