ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দ্বিতীয় দিনের মতো শুক্রবার যানজট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। যানজটের ভয়াবহতা এতটাই তীব্র যে পাঁচ মিনিটের পথ ঘণ্টাতেও পার হওয়া যাচ্ছে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার মহাসড়ক জুড়ে যানজট থাকলেও সেই যানজট শুক্রবার বেড়ে ২৫ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে আশুগঞ্জ-ভৈরব সড়ক সেতুর উপর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ যাওয়ার পথে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: বিধান রঞ্জন রঞ্জন রায় পোদ্দারের গাড়ি বহর এই যানজটের কবলে পড়ে। এমতাবস্থায় উপদেষ্টার গাড়ি বহরটি কিছুক্ষণ ভৈরব উপজেলা পরিষদে অবস্থান নেয়। গাড়ি বহরটি পুনরায় হবিগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়ে শুক্রবার সকাল ১১টায় ভৈরবে টোলপ্লাজা পার হওয়ার পরই যানজটের কবলে পড়ে। স্থানীয় পুলিশ প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুপুর পৌনে ২টায় আশুগঞ্জ উপজেলা অংশের ১০ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে সক্ষম হয়।
স্থানীয় বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও হাইওয়ে পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও বিশ্বরোড মোড়ে তিন ফুট গভীর অসংখ্য গর্তের কারণে ধীরগতিতে চলছে পণ্যবাহী গাড়ি। কখনো সেগুলো গর্তে আটকে গিয়ে বিকল হয়েও পড়ছে। ফলে যানজট বাড়ছে। এসব জায়গায় যান চলাচলের গতি নামিয়ে আনতে হচ্ছে ঘণ্টায় ১ থেকে ৫ কিলোমিটারে। এতে করে যানজট নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, ভৈরব সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে অসংখ্য বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কার। অনেক যাত্রী রাত থেকে সকাল পর্যন্ত যানবাহনের মধ্যেই আটকে ছিলেন।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ খাইরুল আলম জানান, ‘প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের গাড়ি বহরটি আশুগঞ্জ উপজেলা এলাকা অতিক্রম করে দেয়া হয়েছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রহমান বলেন, ‘বিশ্বরোড গোলচত্বর থেকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগী। এতে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রামগামী যানগুলোর চলাচল করে অনেকটা ধীরগতিতে। সড়কের দূরাবস্থার কারণে যানগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন-রাত যানজট লেগেই ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এই যানজট ছিল ১৫ কিলোমিটার জুড়ে। তবে শুক্রবার সকালে এই যানজট ভয়াবহতায় রূপ নেয়। ২৫ কিলোমিটার মহাসড়ক জুড়ে যানজট লেগে আছে। রাস্তার খারাপ অবস্থা ও ড্রাইভারদের অসচেতনতার অভাবে যানজটের কোনো উন্নতি হচ্ছে না। ট্রাফিক পুলিশসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের দল যানজট নিরসনে চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০.৫৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালে শুরু হলেও ধীরগতির কারণে সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিশ্বরোড গোলচত্বর থেকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে সড়কে গর্ত বেড়েই চলছে। যার ফলে যানবাহনকে ধীরগতিতে চলতে বাধ্য হতে হচ্ছে।