সিলেটের গোলাপগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ফাহিম আহমদ হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করেছে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
শুক্রবার (৯ মে) রাতে ওই ঘটনায় জড়িত মা ও দু’ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার ৬ নম্বর ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের বারকোট গ্রামের জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম, দু’ছেলে স্ঈাদ আহমদ ও মাহিদ আহমদ।
জানা গেছে, উপজেলার বারকোট গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে ও গ্রেফতার হওয়া মামাতো ভাই ফাহিম আহমদকে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত বুধবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে মা-বাবা ও দু’ছেলে সংঘবদ্ধ হয়ে ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় নিহতের স্বজনরা প্রথমে উপজেলা হাসপাতাল পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পর দিন বৃহস্পতিবার ফাহিম আহমদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঘটনার পর থেকে স্বামী-স্ত্রী ও দু’ছেলে পলাতক ছিলেন। গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের অভিযানিক দল শুক্রবার গভীর রাতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও দু’ছেলে মাহিদ আহমদ এবং সাঈদ আহমদকে গ্রেফতার করেছে।
গোলাপগঞ্জের হত্যা মামলার আসামি মা ও দু’ছেলেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান মোল্ল্যা।
উল্লেখ্য, বুধবার (৩০ এপ্রিল) উপজেলার বারকোট গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে ফাহিম আহমদের সাথে মামাতো ভাই সাঈদ আহমদ গংদের সাথে নিজ বসত ঘরের সাথে কিছু ভূমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। নিহত ফাহিম আহমদ সিলেট শহরে থাকতেন। বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে আসেন ফাহিম আহমদ। এ সময় ফুফাতো ভাই ও জিলাল উদ্দিনের ছেলে সাঈদ আহমদ এর সাথে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় ভূমি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় সাঈদ আহমদসহ তার অপর আরো এক ভাই ও মা-বাবা সংঘবদ্ধ হয়ে আক্রমণ চালান ফাহিম আহমদের ওপর।
একপর্যায়ে সাঈদ আহমদ উত্তেজিত হয়ে ফাহিম আহমদের পেটে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ফাহিম। তাকে আহত অবস্থায় স্বজনরা গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তার অবস্থা অবনতি থাকায় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পর দিন বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে ফাহিম আহমদের মৃত্যু হয়।
হত্যাকারী সাঈদ আহমদের বাড়ি একই উপজেলার নিশ্চিন্ত খর্দাপাড়া গ্রামে। তিনি বর্তমানে নিহতের বাড়ির পাশের ঘরে বসবাস করে আসছে। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল হালিম বাদি হয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একই পরিবারের তিনজন ও অজ্ঞাতনামা আরো তিনজন আসামিসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন।