মো: নূরুল ইসলাম, চাটমোহর (পাবনা)
পাবনার চাটমোহরে শিশু আকলিমা খাতুন জুঁইকে (৭) ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত পাঁচজনকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় চাটমোহর থানা পুলিশ, নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ নাটোর যৌথ অভিযানে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে চাটমোহর থানায় প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের দিয়ারগাড়ফা গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে সিয়াম আলম (১৩), গাড়ফা গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে সাকিব (১৬), একই গ্রামের সুলতান হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (২৫), চাটমোহর উপজেলার রামপুর গ্রামের গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে শেখ সাদী (১৬) এবং একই গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ (১৬)।
ভিকটিম আকলিমা খাতুন জুঁই নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গাড়ফা উত্তর পাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের মেয়ে। গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের রামপুর গজারগাড়ি বিলের এক ভুট্টা ক্ষেত থেকে আজেদা নুরাইয়া ক্যাডেট মাদরাসার শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুঁইয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে জুঁই জাহিদুল ইসলামের খালা সবুরা খাতুনের বাড়িতে যান। মাঝে মধ্যে সবুরা খাতুনের বাড়িতে রাত যাপনও করতো জুঁই। ১৫ এপ্রিল সকালে জুঁই বাড়ি না ফিরলে তার খোঁজ করতে সবুরা খাতুনের বাড়িতে যান জুঁইয়ের মা মোমেনা খাতুন। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন জুঁই সবুরা খাতুনের বাড়িতে অল্প সময় অবস্থান করেই বাড়িতে ফিরে গেছে। মেয়ে বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে পরিবারের লোকজন। শিশুর লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে জুঁইয়ের দাদি জহুরা খাতুন ভুট্টা খেতে জুঁইয়ের লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জুঁইয়ের মা মোমেনা খাতুন চাটমোহর থানায় মামলা করেন।
প্রেস ব্রিফিং এ আরো জানানো হয়, গোপন সূত্রের ভিত্তিতে যৌথ অভিযানে সিয়াম আলমকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে জুঁই হত্যায় শেখ সাদী, সাকিব, আব্দুল্লাহ, সোহেল রানা সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করে সিয়াম। ১৪ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে জুঁই পাশের একটি আমবাগানে খেলতে গেলে শেখ সাদী তাকে দুলাল হোসেনের কলা বাগানে নিয়ে যায়। কলাবাগানে চারজন মিলে জুঁইকে ধর্ষণ ও অত্যাচার করে। অর্ধমৃতাবস্থায় ভুট্টা খেতে নেয়ার পর সিয়ামও তাকে ধর্ষণ করে। পরে পরনের প্যান্ট দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে জুঁইকে হত্যা করে মুখে অ্যাসিড জাতীয় পদার্থ নিক্ষেপ করে। পাঁচজনই জুঁই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত।