কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল রয়েছে সাগর। এতে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে উচ্চ জোয়ার ও প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে সৈকত ও ঝাউবনে।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গত তিন দিনের ঢেউয়ের প্রবল আঘাতে সমুদ্র সৈকতের অন্তত ১২টি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া শহরের কাছে সমুদ্রসৈকতের শৈবাল, লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলীসহ কয়েকটি পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, ঢেউয়ের আঘাতে সৈকতের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। জোয়ার থেকে রক্ষায় সৈকতের কিটকট চেয়ারগুলো জিও ব্যাগের উপর তুলে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। জোয়ার আর উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে হুমকির মুখে পড়েছে সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী ও শৈবাল পয়েন্টের সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা।
জোয়ারের আঘাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কয়েক স্থানেও ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ঢেউয়ের আঘাতে সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন অংশের গাছপালা ভেঙে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে দু’শতাধিক ঘরবাড়ি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে গত তিন দিন ধরে।
জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফের কিছু এলাকা। নিম্নচাপের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকা। মহেশখালীর ধলঘাটা ও মাতারবাড়ির বেশকিছু এলাকার বসতঘর ও লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকেছে। এতে এলাকাগুলোর অর্ধশত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, পুকুর জলাশয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, কুতুবদিয়া, মহেশখালী দ্বীপসহ উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। তবে আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় সঙ্কেত নামিয়ে ফেলা হয়েছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: নূরুল ইসলাম বলেন, ঢেউয়ের ধাক্কায় ঝাউগাছের গোড়া থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, ফলে গাছ পড়ে যাচ্ছে। উপকূল রক্ষায় আধুনিক বাঁধ নির্মাণ জরুরি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা ও উপযুক্ত বাঁধ ছাড়া কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করা সম্ভব নয়।