সিলেট নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে সকাল থেকেই বসতে দেখা যায়নি কোনো হকারকে। ফলে শহরের রাজপথে পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে নগরীর যানজট নিরসন ও সড়ক-ফুটপাত হকারমুক্ত করার লক্ষ্যে লালদিঘিরপাড়ে অস্থায়ী হকার শেড তৈরি করে দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ভ্রাম্যমাণ হকারদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত অস্থায়ী বাজারে কোনোরকম ভাড়া ছাড়াই ব্যবসার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে হকাররা এখানে আসতে শুরু করেছেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে এমএমপি কমিশনার আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকারকে সড়ক পরিদর্শন করতে দেখা গেছে।
একইসাথে এ দিন অনেক হকারকে তাদের পসরা দিয়ে অস্থায়ী হকার শেডে বসতে দেখা গেছে।
জানা যায়, সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনার ফলে দীর্ঘদিন ধরে সিলেট নগরীতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। এর ফলে নগরবাসীর হাঁটাচলায়ও প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন ভ্রাম্যমাণ হকারদের বসার জন্য লালদিঘিরপাড়ে হকার শেড তৈরি করে দেয়। বর্তমানে ভ্রাম্যমাণ হকাররা রাস্তা-ফুটপাত ছেড়ে লালদিঘির পাড়ের নির্ধারিত স্থানে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। এতে নগরীর সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত হবে। এছাড়া যানজট কমার পাশাপাশি নগরবাসী স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটাচলাও করতে পারবেন। এতে বাড়বে নগরীর সৌন্দর্যও।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগর ভবনের ঠিক পেছনে লালদিঘির পাড় মাঠে নতুন দশটি গলিতে ইট, বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী শেড নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন রাস্তা ও ড্রেন তৈরি করে দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে টয়লেটও। বাজারে প্রবেশের জন্য রয়েছে তিনটি প্রবেশপথ। কাঁচা বাজার, মাছ বাজার, কাপড়ের দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসার জন্য সাইনবোর্ড টানিয়ে স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া সিসিকের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসাথে হকারদের সচেতন করতে সিসিক ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিংসহ প্রচার কাজ চালানো হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘নগরী যানজটমুক্ত করতে এবং সিলেট নগরীর বাসিন্দাদের নির্বিঘ্ন চলাচলের স্বার্থে আমরা ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের জন্য লালদিঘিরপাড়ে অস্থায়ী শেড তৈরি করে দিয়েছি। ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আশা করি, এখন হকাররা নগরীর রাস্তা ও ফুটপাত ছেড়ে লালদিঘিরপাড়ে চলে আসবেন। আমরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনো ভাড়াও নিচ্ছি না। কাউকে কোনো টাকা দিতে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘লালদিঘিরপাড়ে নির্মিত অস্থায়ী বাজারটি হকারদের জন্য একটি নিরাপদ ও সুবিধাজনক আশ্রয়। আশা করি ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা চালিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। একইসাথে শহরের যানজট কমবে। ফুটপাতও দখলমুক্ত হবে। সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সিলেট নগরী গড়তে আমরা সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’



