বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা।
সংবাদ সম্মেলনে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধি নাজমুল হুদা বলেন, ‘গতকাল মেডিসিন ইউনিট-২ এর মেডিক্যাল অফিসার ডা: দিলীপ রায় স্যারের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করা হয়। হামলাকারীরা হাসপাতালে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে আতঙ্কজনক পরিবেশ তৈরি করে। এতে রোগী ও চিকিৎসকরা ভয় পেয়ে যান, চিকিৎসকদের অনেকে ভয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেই, এই ঘটনার বিচার ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে কর্মবিরতিতে যাওয়ার।’
তিনি জানান, সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার বিকেল ৩টা থেকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দেড় শতাধিক ইন্টার্ন চিকিৎসক কর্মবিরতিতে যান।
নাজমুল হুদা আরো বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবির বিরোধী নই। বরং আমরা তা সমর্থন করি। তবে আমাদের নিরাপত্তা আজ চরম হুমকির মুখে। চিকিৎসক ও স্টাফদের ওপর বারবার হামলা হচ্ছে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘হাসপাতালের অন্য স্টাফদের দেয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের সাথে আমরা একমত। তবে ইন্টার্নদের পক্ষ থেকে দাবি করছি—হামলার সাথে জড়িত ও উসকানিদাতাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। তা না হলে জরুরি বিভাগ, আউটডোর ও ওয়ার্ডসহ বর্তমানে সীমিত যে চিকিৎসাসেবা চলছে, সেটিও বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবো।’
অপরদিকে, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের আন্দোলনের সাথে আমরা একমত এবং হাসপাতালের সংস্কার চাই। তবে আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে সাদা অ্যাপ্রোনধারী চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের ওপর। এমনকি আমাদের শিক্ষার্থীদেরও হেনস্থা করা হয়েছে, ধাওয়া দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সবশেষে আমাদের সম্মানিত শিক্ষক দিলীপ স্যারের ওপর হামলা হয়েছে। তাই আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে আমরা ক্লাস ও ওয়ার্ড কার্যক্রম বর্জন করবো।’