পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকায় গত এক মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১০টার দিকে মৎস্য বন্দর আলীপুরের ওষুধ ব্যবসায়ী উবাচো রাখাইন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অপরদিকে রাত ১১টার দিকে মহিপুর বাজারের দর্জি দোকানদার শিশির দাসের মৃত্যু হয়। লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের নুরজামাল ফকির ও একই ইউনিয়নের মিশ্রীপাড়া গ্রামের হাবিব ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর মহিপুর এলাকায় চারজন ডেঙ্গু আক্রান্তের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী ছিলেন। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
স্বজনরা জানায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার নিতে পারে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘মহিপুর এলাকায় প্রতিদিনই নতুন নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। জনসচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত মাইকিং, প্রচারপত্র বিতরণ এবং ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ফগার মেশিনে মশা নিধন স্প্রে ও সচেতনতামূলক প্রচারণা অব্যাহত আছে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে বাড়িঘর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মহিপুর, আলীপুর ও আশপাশের এলাকায় অন্তত ৫০জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া আলীপুর এলাকার এক শিক্ষক পরিবারের তিনজন ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে মহিপুর এলাকায় ডেঙ্গু সংক্রমণ ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। তারা স্থায়ীভাবে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস ও জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।



